রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের স্বামী আর নেই
ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের স্বামী প্রিন্স ফিলিপ ৯৯ বছর বয়সে মারা গেছেন। ব্রিটিশ রাজপ্রাসাদ বাকিংহাম প্যালেস শুক্রবার এক বিবৃতিতে তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে। বিবিসির এক অনলাইন প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে।
ডিউক অব এডিনবরা প্রিন্স ফিলিপ ১৯৪৭ সালে প্রিন্সেস এলিজাবেথকে বিয়ে করেন। বিয়ের পাঁচ বছরের মাথায় দ্বিতীয় এলিজাবেথ ব্রিটেনের রানি হন। ব্রিটিশ রাজপরিবারের ইতিহাসে কোনো রানির সবচেয়ে দীর্ঘদিনের জীবনসঙ্গী ছিলেন প্রিন্স ফিলিপ।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী বাকিংহাম প্যালেস ওই বিবৃতিতে লিখেছে, ‘গভীর দুঃখের সঙ্গে জানানো যাচ্ছে, মহামান্য রানি তার প্রিয় স্বামী ডিউক অব এডিনবরা প্রিন্স ফিলিপের মৃত্যুর কথা ঘোষণা করেছে।’
বাকিংহাম প্যালেসের ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে ‘আজ সকালে উইন্ডসর ক্যাসেলে শান্তিপূর্ণভাবে রাজপরিবারের এই সদস্য মৃত্যুবরণ করেন।’
প্রিন্স ফিলিপের মৃত্যুতে শোক জানিয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, তিনি ‘অগণিত তরুণকে অনুপ্রাণিত করে গেছেন’।
বরিস জনসন আরও বলেন, ‘প্রিন্স ফিলিপ যুক্তরাজ্য, কমনওয়েলথ ও বিশ্বজুড়ে প্রজন্মের পর প্রজন্মের অনুরাগ অর্জন করেছিলেন।’
রানির জীবন সঙ্গী হলেও ফিলিপের কোনো সাংবিধানিক দায়িত্ব ছিল না। কিন্তু রাজপরিবারের এত ঘনিষ্ঠ ও গুরুত্বপূর্ণ তিনি ছাড়া আর কেউ ছিলেন না। ৭৩ বছর তিনি ছিলেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের স্বামী।
রানির আদেশেই ব্রিটিশ রাজতন্ত্রে একসময় তিনি হয়ে ওঠেন দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। জীবনসঙ্গী হিসেবে রানিকে তার কাজে সহযোগিতা করলেও বিশেষ কিছু কাজের ব্যাপারে ফিলিপের বিশেষ আগ্রহ ছিল।
পরিবেশ ও তরুণদের জন্যে অনেক কাজ করেছেন তিনি। স্পষ্টভাষী হিসেবেও পরিচিতি ছিল প্রিন্স ফিলিপের।
আগাম ‘সতর্কতার’ অংশ হিসেবে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি প্রিন্স ফিলিপকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে এক মাস থাকার পর গত ১৬ মার্চ সেন্ট্রাল লন্ডনের ওই হাসপাতাল থেকে তাকে আবার রাজপ্রাসাদে নিয়ে যাওয়া হয়।
ঠিক কী কারণে প্রিন্স ফিলিপকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তা জানানো না হলেও হাসপাতালে ভর্তির সময় বাকিংহ্যাম প্যালেস থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, প্রিন্স ফিলিপের অসুস্থতার কারণ করোনাভাইরাস সম্পর্কিত নয়।
গত জানুয়ারিতে প্যালেসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, প্রিন্স ফিলিপ ও রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ টিকা নিয়েছেন। তাদের সেবায় নিয়োজিত চিকিৎসকই টিকা দিয়েছেন। এছাড়া করোনার শুরু থেকে তারা উইন্ডসরে খুব অল্পসংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়ে বাস করছেন।
প্রিন্স ফিলিপ ও রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ দম্পতির সন্তান চার জন। তাদের আট নাতি-নাতনি এবং সেসব নাতি-নাতনির আরও ১০ সন্তান রয়েছে।
প্রথম সন্তান প্রিন্স অব ওয়েলস প্রিন্স চার্লসের জন্ম ১৯৪৮ সালে। দ্বিতীয় সন্তান প্রিন্সেস রয়্যাল প্রিন্সেস আন্নের ১৯৫০ সালে। ১৯৬০ সালে জন্ম নেন ডিউক অব ইয়র্ক প্রিন্স অ্যান্ড্রিউ। চতুর্থ ও শেষ সন্তান আর্ল অব ওয়েসসেক্স প্রিন্স এডওয়ার্ডের জন্ম ১৯৬৪ সালে।
১৯২১ সালে গ্রিক দ্বীপ কোরফুতে জন্মগ্রহণ করেন প্রিন্স ফিলিপ। তার বাবা ছিলেন গ্রিস ও ডেনমার্কের প্রিন্স অ্যান্ড্রিউ। তিনি হেলনেসের রাজা প্রথম জর্জের কনিষ্ঠ পুত্র ছিলেন। তার মা প্রিন্সেস অ্যালিস ছিলেন লর্ড লুইস মাউন্টব্যাটেনের মেয়ে।
এএস/জেএস