ইসরায়েল-লেবানন সীমান্ত থেকে পালাচ্ছে লোকজন
ক্রমবর্ধমান সীমান্ত সংঘর্ষের মাঝে ইসরায়েল এবং লেবানন— উভয় সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, তারা কখনও এমন উত্তেজনা অনুভব করেননি। ইরান-সমর্থিত লেবাননের সবচেয়ে শক্তিশালী সামরিক ও রাজনৈতিক গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের মাঝে প্রধান যুদ্ধক্ষেত্র হয়ে উঠতে পারে সীমান্তের উভয় পাশের শহরগুলো। এই ভয়ে উভয় পাশের সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা ব্যাগ গুছিয়ে অন্যত্র চলে যেতে শুরু করেছেন।
মঙ্গলবার লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্তে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর সদস্যদের সাথে হিজবুল্লাহর ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এতে সীমান্ত এলাকায় হিজবুল্লাহর পাঁচ সদস্য নিহত হওয়ার পর ইসরায়েলে হামলার পরিমাণ বৃদ্ধি করেছে লেবাননের সশস্ত্র এই গোষ্ঠী। মঙ্গলবার দিনভর লেবানন থেকে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে হিজবুল্লাহ। হামলায় ইসরায়েলে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
ইসরায়েলের সীমান্ত শহর কিরিয়াত শমোনার বাস্তুচ্যুত বাসিন্দা স্মাদার আজৌলাই রয়টার্সকে বলেন, ‘এবার সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। ভয়ঙ্কর ভয় কাজ করছে।’
ইসরায়েল এবং হিজবুল্লাহর অতীতের পাল্টাপাল্টি গোলাবর্ষণের কথা উল্লেখ করে রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘এবারের পরিস্থিতি আর আগের মতো নেই। এখানে বোমা, রকেট হামলা হচ্ছে। আমরা বোমা আশ্রয়কেন্দ্রে পালিয়েছি।’
কিরিয়াত শমোনা থেকে ৯ মাইল উত্তরে লেবাননের ব্যবসায়ী মোহাম্মদ মুস্তাফা এখনও তার নিজ শহর মারজায়ুন ছেড়ে যাননি। তবে স্যুটকেস গুছিয়ে প্রস্তুত হয়ে আছেন তিনি। মুস্তাফা বলেন, ‘কখনও কখনও মনে হচ্ছে বড় ধরনের যুদ্ধ শুরু হতে যাচ্ছে। আর এই যুদ্ধে অনেক দেশ জড়িয়ে যাবে। অন্য সময় মনে হতো শহরটি শান্ত আছে, কোনও যুদ্ধ হবে না। আসলে সত্যিই কী ঘটতে যাচ্ছে তা কেউ জানেন না।
হামাসের আকস্মিক হামলার প্রতিশোধে গাজায় ইসরায়েলের স্থল হামলা শুরু হলে তেলআবিবের আঞ্চলিক শত্রুরা তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে বলে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। আর এমন ঘটনা ঘটলে লেবানন-ইসরায়েল সীমান্ত এলাকা মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের বৃহত্তর দ্বিতীয় ফ্রন্টে পরিণত হতে পারে।
গত ৭ অক্টোবরের হামলায় এখন পর্যন্ত এক হাজার ৪০০ জনের বেশি ইসরায়েলি নিহত হয়েছেন। চলমান এই যুদ্ধকে ইসরায়েলের ৭৫ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী বলে মনে করা হচ্ছে।
সূত্র: রয়টার্স।
এসএস