নোবেলজয়ী ও ফিনল্যান্ডের সাবেক প্রেসিডেন্ট আহতিসারি মারা গেছেন
শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী এবং ফিনল্যান্ডের সাবেক প্রেসিডেন্ট মার্টি আহতিসারি মারা গেছেন। ১৯৯৪ সাল থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত ফিনল্যান্ডের ১০ম প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি।
আর আন্তর্জাতিক সংঘাত সমাধানে ভূমিকা রাখার কারণে তিনি শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন ২০০৮ সালে। সোমবার (১৬ অক্টোবর) ৮৬ বছর বয়সে মারা যান তিনি।
ফিনিশ প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী মার্টি আহতিসারি সোমবার ৮৬ বছর বয়সে মারা গেছেন বলে ফিনিশ প্রেসিডেন্টের কার্যালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে। কসোভো, ইন্দোনেশিয়া এবং উত্তর আয়ারল্যান্ডের বিরোধপূর্ণ অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য বিশ্বজুড়ে তার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছিল।
এছাড়া এসব অঞ্চলে যুদ্ধ এবং সংঘাত যে অনিবার্য সেটিও মেনে নিতে অস্বীকার করেছিলেন তিনি।
২০০৮ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার গ্রহণ করার সময় মার্টি আহতিসারি বলেছিলেন, ‘শান্তি হলো ইচ্ছার প্রশ্ন। সকল দ্বন্দ্ব মীমাংসা করা যেতে পারে এবং সেগুলো চিরস্থায়ী হতে দেওয়ার জন্য কোনও অজুহাত নেই।’
এছাড়া আহতিসারির বৈশ্বিক খ্যাতি ফিনল্যান্ডের ভাবমূর্তিকে বেশ বাড়িয়ে তোলে কারণ এই দেশটি সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের ছায়া থেকে বেরিয়ে এসেছিল।
প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্বপালনের সময় তিনি ফিনল্যান্ডের ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যপদকে সমর্থন করেছিলেন এবং ভোটারদের এ সংক্রান্ত গণভোটে সমর্থন দিতেও উৎসাহিত করেছিলেন। পরে ফিনল্যান্ডের ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হওয়ার বিষয়টি ৫৭ শতাংশ সমর্থনে পাস হয়।
উল্লেখ্য, ১৯৩৭ সালে ভিপুরিতে আহতিসারির জন্ম হয়। এই অঞ্চলটি এখন রাশিয়ার অংশ। মাত্র দুই বছর বয়সে সোভিয়েত বাহিনী তাদের এলাকা আক্রমণ করলে তার পরিবার ঘর-বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। তিনি বলেছিলেন, শৈশবের সেই বছরগুলো তাকে ‘চিরন্তন বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিতে’ পরিণত করেছিল এবং এই কারণে তিনি উদ্বাস্তুদের দুর্দশার প্রতি ছিলেন সংবেদনশীল।
তরুণ বয়সে মার্টি আহতিসারি শিক্ষক হয়েছিলেন এবং পাকিস্তানে শিক্ষামূলক প্রকল্পে অংশ নিয়েছিলেন। আর এই অভিজ্ঞতা বিশ্বের কাছে তার চোখ খুলে দেয়। তিনি ১৯৬৫ সালে ফিনল্যান্ডের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগদান করেন এবং ১৯৭৩ সালে তানজানিয়ায় ফিনিশ রাষ্ট্রদূত নিযুক্ত হন।
দক্ষিণ আফ্রিকার সাথে বছরের পর বছর রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর নামিবিয়াকে স্বাধীনতা অর্জনে সহায়তা করা ছিল আহতিসারি প্রথম বড় কূটনৈতিক অর্জনগুলোর মধ্যে একটি।
তিনি ১৯৭৭ সাল থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত নামিবিয়ায় জাতিসংঘের কমিশনার হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন এবং ১৯৯০ এর দশকের শুরু পর্যন্ত বিভিন্ন ভূমিকায় এই অঞ্চলে এবং বাইরে কাজ করেন।
টিএম