যে কারণে গাজায় স্থল হামলায় কালক্ষেপণ করছে ইসরায়েল
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় স্থল হামলা চালাতে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে ইসরায়েল। তারা যে কোনো সময় গাজায় হামলে পড়তে পারে।
বলা হচ্ছে, ২০০৬ সালে লেবানন হামলার পর এটি ইসরায়েলের সবচেয়ে উচ্চবিলাসী স্থল অভিযান হতে যাচ্ছে। এছাড়া ২০০৮ সালের পর প্রথমবারের মতো গাজায় হামলা চালিয়ে সেখানকার ভূমি বা অঞ্চল দখলের পরিকল্পনা করছে তারা।
স্থল হামলার অংশ হিসেবে গাজায় ব্যাপক বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। গত ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধের প্রথম ছয়দিনেই ৬ হাজার বোমা ফেলেছে ইসরায়েলি বিমানবাহিনী।
এছাড়া হামলার জন্য ইতিমধ্যে গাজা সীমান্তে ৩ লাখ সেনা জড়ো করেছে ইসরায়েল। তাদের সঙ্গে রয়েছে অত্যাধুনিক সব যুদ্ধাস্ত্র। তবে সব প্রস্তুতি শেষ হলেও এখনো গাজায় স্থল হামলা শুরু করেনি ইসরায়েল।
এর কারণ কী?
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম দ্য নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনী এখনো স্থল অভিযান শুরু করছে না; কারণ সেখানকার আবহাওয়া এখন কিছুটা মেঘাচ্ছন্ন। এখন যদি সেনারা গাজায় ঢুকে পড়ে তাহলে তাদের আকাশ নিরাপত্তা ও সহযোগিতা দেওয়ার বিষয়টি যুদ্ধবিমানের পাইলট ও ড্রোনের জন্য কঠিন হবে।
আরেকটি বিষয় হলো— হামাসের সুবিস্তৃত সুড়ঙ্গ। সামরিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পুরো গাজায় হামাসের এত সুড়ঙ্গ আছে যে, যখন ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় প্রবেশ করবে তখন তাদের অত্যাধুনিক অস্ত্র কোনো কাজে আসবে না। এর বদলে তাদের হামাসের যোদ্ধাদের সঙ্গে সম্মুখ লড়াইয়ে জড়াতে হবে।
ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর একজন মুখপাত্র সম্প্রতি স্বীকার করেছেন, তারা হামাসের সুড়ঙ্গ লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছেন। তবুও এটি একটি কঠিন যুদ্ধ হবে।
এছাড়া ইসরায়েলের সামরিক বিশ্লেষকরা বলছেন, হামাস গত সপ্তাহে যেসব ইসরায়েলিকে ধরে নিয়ে গেছে তাদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করবে তারা। আর এ বিষয়টি ইসরায়েলি বাহিনীর জন্য কঠিন হবে।
এমনকি ইসরায়েলি বাহিনী যদি স্থল হামলা চালায়— তাহলে তাদের যে শুধু হামাসের সঙ্গে যুদ্ধ করতে হবে; এমন নিশ্চয়তা নেই। কারণ স্থল হামলার জবাব দিতে লেবাননের শক্তিশালী সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহও ইসরায়েলের উপর হামলা চালাতে পারে। সঙ্গে পরোক্ষভাবে যুক্ত হতে পারে ইরানও।
এরমধ্যেই হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের সেনাদের মধ্যে মর্টার, ক্ষেপণাস্ত্র ও গুলি বিনিময় হয়েছে।
হিজবুল্লাহর সেকেন্ড-ইন-কমান্ড নাঈম কাশেম হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ‘মিত্র গোষ্ঠী’ হামাসের সঙ্গে যোগ দিতে তারা ‘পুরোপুরি প্রস্তুত’ আছেন।
সূত্র: নিউইয়র্ক টাইমস, এনডিটিভি
এমটিআই