ইসরায়েলে হামাসের হামলা দেখে ইরান নিজেই হতবাক
চলতি সপ্তাহে ইসরায়েলে নজিরবিহীন আক্রমণ শুরু করে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। গাজা উপত্যকা থেকে চালানো হামাসের এই হামলা ছিল ইসরায়েলের কাছে রীতিমতো বিস্ময়কর।
হামলার পরপরই নানা দিক থেকে অভিযোগ উঠতে শুরু করে, হামাসের এই হামলায় সহায়তা করেছে ইরান। তবে আসলে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামাসের হামলা দেখে ইরান নিজেই হতবাক হয়ে গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সংগ্রহ করা গোয়েন্দা তথ্যে এমন তথ্যই উঠে এসেছে। বার্তাসংস্থা রয়টার্সের বরাত দিয়ে বুধবার (১১ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলে হামাসের নজিরবিহীন হামলা দেখে ইরানের প্রধান প্রধান নেতারা বিস্মিত হয়ে গেছেন বলে যুক্তরাষ্ট্রের সংগ্রহ করা গোয়েন্দা তথ্যে প্রকাশ পেয়েছে। আর মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বুধবার এই তথ্য সামনে এনেছে প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস।
যদিও এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে হোয়াইট হাউস তাৎক্ষণিকভাবে কোনও জবাব দেয়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স। অবশ্য হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান গত মঙ্গলবার বলেন, হামাসের এই হামলার সাথে ইরানের যোগসূত্রের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র এখনও নিশ্চিত নয়।
তিনি বলেন, ‘আমরা ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের সঙ্গে এই প্রশ্নটি নিয়ে প্রতিদিন কথা বলছি। আমরা আমাদের গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে বোঝার চেষ্টা করছি যে, আমাদের কাছে এই বিষয়ে আরও কোনও তথ্য আছে কিনা’।
এছাড়া ইসরায়েলে হামাসের ভয়াবহ হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ নিজেও অস্বীকার করেছে ইরান।
প্রসঙ্গত, মুসলিমদের তৃতীয় পবিত্র ধর্মীয় স্থান আল-আকসা মসজিদের পবিত্রতা লঙ্ঘন এবং অবৈধ বসতিস্থাপনকারীদের অত্যাচারের জবাব দিতে গত শনিবার ইসরায়েলে ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’ নামে সামরিক অভিযান শুরু করে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস।
এরপর থেকে টানা ছয়দিনের এই সংঘাতে নিহত ইসরায়েলিদের সংখ্যা ১২০০ ছাড়িয়েছে। নিহতদের মধ্যে বহু সেনাসদস্য, নারী ও শিশু রয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছে আরও হাজারও ইসরায়েলি। এছাড়া আরও বহু মানুষকে বন্দি করেছে হামাস।
এছাড়া ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলছে, গত শনিবার থেকে ইসরায়েলে ১৫৫ সেনাসহ ১২০০ জনেরও বেশি মানুষ মারা গেছে।
পরে গত শনিবার থেকে ইসরায়েলের অবিরাম বিমান হামলা গাজার পুরো আশপাশের এলাকাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে এবং কমপক্ষে ১২০০ জন ফিলিস্তিনি নিহত ও আরও হাজার হাজার আহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন
জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থা বলেছে, ইসরায়েলের হাতে অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনি এই ভূখণ্ডে আড়াই লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। পর্যবেক্ষকরা এটিকে ‘মানবিক বিপর্যয়’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহতদের মধ্যে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার ১১ কর্মীও রয়েছেন। অবশ্য নিহত এসব কর্মীরা কী ফিলিস্তিনি নাকি বিদেশি কর্মী কিনা তা নির্দিষ্ট করা হয়নি।
তবে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ইউনাইটেড নেশনস রিলিফ অ্যান্ড ওয়ার্কস এজেন্সি ফর প্যালেস্টাইন রিফিউজিস ইন দ্য নেয়ার ইস্ট (ইউএনআরডব্লিউএ)-এর স্কুলের পাঁচজন শিক্ষক, একজন গাইনোকোলজিস্ট, একজন প্রকৌশলী, একজন মনস্তাত্ত্বিক পরামর্শদাতা এবং তিনজন সহায়ক কর্মী অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন।
টিএম