গাজায় ইসরায়েলি হামলায় জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার ১১ কর্মী নিহত
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার ১১ কর্মী নিহত হয়েছেন। গত শনিবার থেকে চলা অবিরাম বিমান হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন তারা।
এছাড়া ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের এই চলমান সংঘাতে রেড ক্রিসেন্টের পাঁচ সদস্যও নিহত হয়েছেন। বার্তসংস্থা রয়টার্সের বরাত দিয়ে বুধবার (১১ অক্টোবর) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শনিবার থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থার ১১ জন কর্মী এবং আন্তর্জাতিক রেড ক্রস ও রেড ক্রিসেন্টের পাঁচ সদস্যও সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন বলে সংস্থাগুলো বুধবার জানিয়েছে।
ইউএনডব্লিউআরএ এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘গাজা উপত্যকায় গত ৭ অক্টোবর থেকে ১১ জন ইউএনআরডব্লিউএ সহকর্মীকে হত্যার বিষয়টি আমরা খুবা দুঃখের সঙ্গে নিশ্চিত করছি।’
অবশ্য নিহত এসব কর্মীরা কী ফিলিস্তিনি নাকি বিদেশি কর্মী কিনা তা নির্দিষ্ট করা হয়নি ওই বিবৃতিতে। তবে এতে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ইউএনআরডব্লিউএ স্কুলের পাঁচজন শিক্ষক, একজন গাইনোকোলজিস্ট, একজন প্রকৌশলী, একজন মনস্তাত্ত্বিক পরামর্শদাতা এবং তিনজন সহায়ক কর্মী অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘নিহত কর্মীদের কয়েকজন তাদের পরিবারের সাথে তাদের বাড়িতে নিহত হয়েছেন। নিহত কর্মীদের জন্য ইউএনআরডব্লিউএ শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করছে।’
অন্যদিকে ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রেড ক্রস অ্যান্ড রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (আইএফআরসি) পৃথক এক বিবৃতিতে বলেছে, চলমান হামাস-ইসরায়েল সংঘাতে তাদের পাঁচজন সদস্য নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে চারজন গাজায় এবং বাকি একজন ইসরায়েলে নিহত হয়েছেন।
আইএফআরসি জানিয়েছে, বুধবার দুটি পৃথক ঘটনায় তাদের অ্যাম্বুলেন্সগুলোতে হামলা চালানো হয়েছে এবং এতে চার ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট প্যারামেডিক নিহত হয়েছেন।
ইউনাইটেড নেশনস রিলিফ অ্যান্ড ওয়ার্কস এজেন্সি ফর প্যালেস্টাইন রিফিউজিস ইন দ্য নেয়ার ইস্ট বা ইউএনডব্লিউআরএ আরও বলেছে, ইসরায়েলি হামলায় অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত প্রায় এক লাখ ৭৫ হাজার ৫০০ জন গাজা ভূখণ্ডজুড়ে ৮৮টি স্কুলে আশ্রয় নিয়েছে।
আরও পড়ুন
সংস্থাটি বলছে, ‘ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর বিমান হামলা অব্যাহত থাকায় অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত মানুষের এই সংখ্যা আরও বাড়ছে। ইউএনডব্লিউআরএ কর্মীরা আশ্রয়কেন্দ্রে বাস্তুচ্যুতদের প্রয়োজন মেটাতে চব্বিশ ঘণ্টা কাজ করে যাচ্ছেন। অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে এখানে খাবার, অন্যান্য মৌলিক জিনিস এবং খাবার পানীয়র সীমাবদ্ধতা রয়েছে।’
প্রথম আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পরে ১৯৪৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ইউএনডব্লিউআরএ। প্রতিষ্ঠার পর থেকে সংস্থটি গাজা, পশ্চিম তীর, জর্ডান, সিরিয়া এবং লেবাননে স্কুলিং (শিক্ষা), প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা এবং মানবিক সহায়তাসহ অন্যান্য জনসেবা প্রদান করে আসছে।
ইউএনআরডব্লিউএ জানিয়েছে, তাদের দুটি স্কুল ইসরায়েলি বিমান হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া হামলার কারণে গাজা উপত্যকাজুড়ে তাদের পরিচালিত সমস্ত স্কুল বন্ধ রয়েছে।
টিএম