ইসরায়েলকে নিয়ে আবেগী বার্তা, গাজায় বোমা হামলা নিয়ে বললেন না কিছু
ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যকার যুদ্ধ নিয়ে মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) নতুন করে বক্তব্য দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ওই বক্তব্য দেওয়ার সময় কিছুটা আবেগী হয়ে পড়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রতিশ্রতি দিয়েছেন, হামাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে ইসরায়েলকে আরও সামরিক সহায়তা দেবেন তারা।
বাইডেন তার বক্তব্যে বলেছেন, হামাস ইসরায়েলে পুরো পরিবারকে হত্যা, নারীদের ধর্ষণ করার মতো নৃশংসতা চালিয়েছে। এছাড়া শিশুদের হত্যা করেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘এটি হলো ট্র্যাজেডি, চূড়ান্ত পর্যায়ের নৃশংতা। আমরা ইসরায়েলের পাশে থাকব, ইসরায়েলিদের সমর্থন জানিয়ে যাব; যারা অপূরণীয় ক্ষতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আমরা ঘৃণা এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে নিজেদের অবস্থান ধরে রাখব।’
তবে ইসরায়েলে হামাসের হামলার ব্যাপারে কথা বললেও— গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের নির্বিচার বিমান হামলা এবং শত শত বেসামরিক মানুষের মৃত্যুর ব্যাপারে একটি কথাও বলেননি বাইডেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট এমন বক্তব্য দেওয়ার পর এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে হামাস। তারা বলেছে, বাইডেনের বক্তব্য পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করে হামাস। গাজাভিত্তিক এ গোষ্ঠী দাবি করেছে, বাইডেন এই বক্তব্যের মাধ্যমে ‘ইসরায়েলি সরকারের অপরাধ এবং ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে চালানো সন্ত্রাসবাদকে’ আড়াল করেছেন।
হামাস আরও বলেছে, বাইডেনের এ বক্তব্য ‘গায়ে আগুন ধরানোর মতো।’ এছাড়া তিনি এমন সময় এ ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন যখন ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় বর্বর হামলা চালাচ্ছে।
প্রেসিডেন্ট বাইডেন তার বক্তব্যে আরও বলেছেন, হামাস হলো একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। যারা সাধারণ ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়ায় না।
বাইডেনের এ কথারও প্রতিবাদ করেছে হামাস। তারা বলেছে, ‘বাইডেন তার বক্তব্যে, বিশ্বের নাকের ডগায় ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর চালানো ঠাণ্ডা মাথার গণহত্যার বিষয়টি উল্লেখ করেননি।’
এছাড়া হামাস মার্কিন প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, ‘তারা যেন তাদের অবস্থান নিয়ে আবারও ভাবে এবং ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী নিয়ে দ্বিমুখী নীতি পরিবর্তন করে।’
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে যুক্তরাষ্ট্রের ফেলোশিপ অব রিকনশিলেশনের বিশ্লেষক অ্যারিয়েল গোল্ড বলেছেন, ইসরায়েল নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টরা এ পর্যন্ত যত বক্তব্য দিয়েছেন ‘বাইডেনের এ বক্তব্য সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ইসরায়েলপন্থি।’
তিনি বলেছেন, ‘সাধারণত আমরা অন্তত মুখের কথা হলেও অন্যদের সহিংসতা থেকে নিবৃত হতে বলি। কিন্তু এক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট বাইডেন ইসরায়েলের পক্ষে থাকার প্রতিশ্রতি দিয়েছেন। এই ইসরায়েল এখন যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত করার পরিকল্পনা করছে।’
এছাড়া তিনি বলেছেন, বাইডেন আইনের শাসনের কথা বলছেন। কিন্তু তিনি আন্তর্জাতিক আইনের কথা বলছেন না। কারণ যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক আইন মানে না। আর আইনের শাসন তাই হতে পারে যা বাইডেন বলবেন।
তিনি আরও বলেছেন, আন্তর্জাতিক আইনে বলা আছে, আপনি কাউকে খাদ্য, পানি, জ্বালানি এবং বিদ্যুৎ থেকে বঞ্চিত করতে পারবেন না। কিন্তু ইসরায়েল গাজায় পূর্ণ অবরোধ আরোপ করে এ সবকিছু বন্ধ করে দিলেও; এখন পর্যন্ত এ নিয়ে কোনো কথা বলেনি মার্কিন প্রশাসন।
আরও পড়ুন
সূত্র: আল জাজিরা
এমটিআই