দিল্লি পুলিশের হাতে আটক অভিষেক ব্যানার্জি, দুঘণ্টা পর মুক্তি
কৃষি ভবনে রাজ্যের বঞ্চিতদের হয়ে অভিযোগ জানাতে গিয়ে দিল্লি পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন অভিষেক ব্যানার্জিসহ তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা। এ ঘটনার প্রতিবাদে রাজ্যের জেলায় জেলায় বিক্ষোভ হয়। কলকাতায় মুরলীধর সেন লেনে বিজেপি দপ্তরের সামনে পতাকা হাতে স্লোগান দেন তৃণমূল নেতা-কর্মীরা।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়, মন্ত্রীর কাছে অভিযোগ জানাতে গিয়েছিলেন তৃণমূল নেতারা। মন্ত্রী দেখা তো করেনইনি। উল্টো রাত ৯টার পর বিশাল পুলিশবাহিনী কৃষিভবনে প্রবেশ করে। পুলিশ তৃণমূল নেতাদের অবিলম্বে কৃষিভবন খালি করে চলে যেতে বলে। নেতারা কৃষিভবন থেকে বের হতে না চাওয়ায় তাদের ভবন থেকে বের করে দেয় পুলিশ।
এরপর অভিষেক ব্যানার্জিসহ তৃণমূল নেতাদের গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায় দিল্লি পুলিশ। তিনটি বাসে করে তৃণমূলের প্রতিনিধিদের নিয়ে যাওয়া হয় উৎসব সদন মুখার্জিনগর থানায়। পরে থানার ভেতর থেকে গাড়ি ঘুরিয়ে তৃণমূলের প্রতিনিধিদের বাসে করে পুলিশ নিয়ে যায় উৎসব সদন সশস্ত্র পুলিশের ক্যাম্পে। খবর পেয়ে রাতেই ক্যাম্পের বাইরে জড় হন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। রাত ১১টা নাগাদ তাদের পুলিশলাইন থেকে মুক্তি দেওয়া হয়।
এদিকে এর আগেই তৃণমূল নেতাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল কৃষিমন্ত্রী গিরিরাজ সিং থাকবেন না। বদলে কৃষি ভবনে কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতির কাছে মঙ্গলবার সন্ধা ৬টা নাগাদ বাংলার বঞ্চিত জব কার্ড হোল্ডারদের চিঠি পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল অভিষেক-সহ তৃণমূল নেতৃত্বের। সময় মতই মন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌঁছেও গিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন দলের নেতারা। তারপর প্রায় ঘণ্টা তিনেক পার হলেও তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে দেখা করেননি প্রতিমন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতি। উল্টো তৃণমূল নেতাদের জানিয়ে দেওয়া হয়, পাঁচ জন এলে দেখা করতেন মন্ত্রী। কিন্তু, ৪০ জন এসেছেন, তাই তিনি দেখা করবেন না। এই কথা জানার পর ক্ষোভে ফেটে পড়েন তৃণমূলের প্রতিনিধিরা।
এদিন বঞ্চিত কৃষকদের চিঠি কাঁধে চাপিয়ে কৃষিভবনে প্রবেশ করেছিলেন অভিষেক ব্যানার্জি। তিনি কৃষি ভবনের মেঝেতেই বসে পড়েন। দাবি জানান, মন্ত্রী দেখা না-করা পর্যন্ত কৃষিভবন ছাড়বেন না। তার দেখাদেখি কৃষিভবনের মেঝেতে বসে অবস্থান শুরু করেন তৃণমূলের অন্যান্য প্রতিনিধিরাও। তাদের অভিযোগ বিকেলে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী কৃষিভবনে এসেছিলেন। মন্ত্রী তার সঙ্গে দেখা করেছেন। কিন্তু, বঞ্চিতদের প্রতিনিধি তৃণমূলের নেতাদের সঙ্গে মন্ত্রী দেখা করেননি। উল্টো একেকবার একেকরকম কথা বলে তৃণমূলের প্রতিনিধিদের বিভ্রান্ত করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। রাত ৯টাতেও কৃষি ভবনে মন্ত্রীর অপেক্ষায় বসেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়রা।
আরও পড়ুন
কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রীর দপ্তর থেকে জানানো হয়, অভিষেক ব্যানার্জিরা বাংলার বকেয়া অর্থের দাবিতে ৪০ জনের প্রতিনিধি নিয়ে এসেছেন। সেই প্রতিনিধিদলে ছিলেন বাংলার তৃণমূল সাংসদ। তবে এত লোকের সঙ্গে মন্ত্রীর দেখা করা সম্ভব নয়। সর্বাধিক তৃণমূলের পাঁচ জন প্রতিনিধি এলে দেখা করতেন প্রতিমন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতি। এরপর তৃণমূলের প্রতিনিধিদলকে না-জানিয়েই কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী কৃষি ভবন থেকে বেরিয়ে যান বলে খবর পান তৃণমূলের নোতরা।
এমএসএ