আগ্রাসনকারীর হাতে ভেটো ক্ষমতা জাতিসংঘকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে গেছে
জাতিসংঘের ছয়টি প্রধান অঙ্গের অন্যতম জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে ‘অকার্যকর’ বলেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। আর এর পেছনে দায়ী করেছেন সংস্থাটির স্থায়ী সদস্য রাশিয়ার হাতে থাকা ভেটো ক্ষমতাকে।
এছাড়া আগ্রাসনকারীর হাতে ভেটো ক্ষমতা জাতিসংঘকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে গেছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। ইউক্রেনে মস্কোর আগ্রাসনের বিষয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে প্রথম ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত হয়ে জেলেনস্কি এই মন্তব্য করেন।
বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি তার দেশে মস্কোর আগ্রাসনের বিষয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে প্রথমবারের মতো ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত হয়ে বলেছেন, রাশিয়ান ভেটো বিশ্ব সংস্থাটিকে (জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ) ‘অকার্যকর’ করেছে।
তিনি বলেছেন, কোনও দেশে আগ্রাসনের বিষয়ে জাতিসংঘ অচলাবস্থার মধ্যে রয়েছে এবং ইউক্রেন আক্রমণের শাস্তি হিসাবে রাশিয়ার হাতে থাকা ভেটোর অধিকার কেড়ে নিতে হবে। মূলত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্য হিসাবে রাশিয়া ভেটো ক্ষমতা পেয়েছিল।
প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেন, ‘বিশ্বের সবাই দেখতে পাচ্ছেন ঠিক কোন বিষয়টি জাতিসংঘকে অকার্যকর করে তুলেছে। নিরাপত্তা পরিষদের এই আসনটি রাশিয়া সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর পর্দার আড়ালে কারসাজির কারণে অবৈধভাবে দখল করেছে। (রাশিয়ার) এই আসনে মিথ্যাবাদীরা বসে আছে যাদের কাজ রাশিয়ার সংঘটিত আগ্রাসন এবং গণহত্যাকে ন্যায্যতা দেওয়া।’
তিনি বলেন, ‘আগ্রাসনকারীর হাতে ভেটো ক্ষমতা জাতিসংঘকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে গেছে। আপনি যেই হোন না কেন, জাতিসংঘের বিদ্যমান ব্যবস্থা এখনও আপনাকে ভেটো ক্ষমতার চেয়ে কম ক্ষমতা দেয় যা মাত্র কয়েকজনের হাতে আছে এবং তাদেরই একটি হচ্ছে রাশিয়া। আর এটিই দেশটি (রাশিয়া) জাতিসংঘের অন্য সকল সদস্যদের ক্ষতির জন্য ব্যবহার করে।’
ইউক্রেনের এই প্রেসিডেন্ট বলেন, জাতিসংঘের সংস্কার নিয়ে বহু বছর ধরে আলোচনা চলছে এবং তাই এই বিষয়টি জাতিসংঘের সংস্কারের প্রক্রিয়া হওয়া উচিত। ভেটোর ব্যবহারেরও সংস্কারের প্রয়োজন এবং এটি প্রধান সংস্কার কাজ হতে পারে।
টানা দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে ইউক্রেনে আগ্রাসন চালাচ্ছে রাশিয়া। জেলেনস্কি বলেন, (ইউক্রেনে) স্থায়ী শান্তির একমাত্র উপায় হলো রাশিয়ান সৈন্যদের সম্পূর্ণ প্রত্যাহার এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর ১৯৯১ সালের সীমানার মধ্যে কিয়েভের নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে দেওয়া।
এদিকে রাশিয়ান বাহিনী বুধবার পূর্ব ইউক্রেনের তোরেৎস্ক শহরে গোলাবর্ষণ করেছে এবং এতে চারজন নিহত হয়েছেন বলে ইউক্রেনের জেনারেল প্রসিকিউটর অফিস জানিয়েছে।
টিএম