সিঙ্গাপুরে অর্থপাচারকারী ১০ জনের স্ত্রীরাও সন্দেহের তালিকায়
এশিয়ার দেশ সিঙ্গাপুরে আগস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহে অর্থপাচারকারীদের বিরুদ্ধে বড় ধরনের অভিযান চালানো হয়। ওই অভিযানে ১০ অর্থপাচারকারীসহ প্রায় ১ বিলিয়ন সিঙ্গাপুরি ডলারের সমমূল্যের সম্পদ ও অর্থ জব্দ করা হয়।
মালয়েশিয়াভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দি নিউ স্ট্রেইট টাইমস রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটক সেসব অর্থপাচারকারীদের স্ত্রী ও অন্যান্য আত্মীয়-স্বজনের ওপরও নজরদারি চালানো হচ্ছে। তাদেরও রাখা হচ্ছে সন্দেহের তালিকায়।
আটককৃতদের সঙ্গে পরিচয় আছে এমন ব্যক্তিদের সম্পদ ও ব্যবসা নিয়ে তদন্ত হচ্ছে।
আরও পড়ুন>>> সিঙ্গাপুরে মানি লন্ডারিং: গ্রেপ্তার ১০ জন কোন দেশের নাগরিক?
গত ২৭ আগস্ট সিঙ্গাপুরের আইন মন্ত্রণালয় মূল্যবান ধাতু ও দামি পাথর ব্যবসায়ীদের কাছে একটি নোটিশ পাঠায়। ওই নোটিশে ২৪ জন ব্যক্তির বিরুদ্ধে তথ্য চাওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে অভিযুক্তরা এসব ব্যবসার মাধ্যমে কোনো ধরনের সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন কি না সেটি যেন তাদের অবহিত করা হয়।
পরবর্তীতে আদালের শুনানিতে অর্থপাচার মামলার প্রসিউকিশন জানায়, অভিযুক্তদের তালিকায় রয়েছে অর্থপাচার মামলায় আটক ১০ ব্যক্তির আত্মীয় ও স্ত্রীরা।
আরও পড়ুন>>> সিঙ্গাপুরের কঠোর বার্তা, অবৈধ প্রমাণ হলেই জব্দ হবে সম্পদ
সংবাদমাধ্যম নিউ স্ট্রেইট টাইমস জানিয়েছে, ওই ১০ অভিযুক্তের স্ত্রীরাও আর্থিকভাবে বেশ প্রভাবশালী। ওই ব্যক্তিদের স্ত্রীদের নামেও অঢেল সম্পতি রয়েছে। এছাড়া অভিযুক্তদের কারও কারও ভাই বা অন্য আত্মীয়দের নামেও অনেক সম্পত্তির খোঁজ পাওয়া গেছে।
এদিকে আগস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহে চালানো সেই অভিযানে যে ১০ জনকে আটক করা হয় তাদের মধ্যে সাইপ্রাস, তুরস্ক, চীন, কম্বোডিয়া এবং নি-ভানুয়াতুর নাগরিকও ছিলেন। যদিও ওই ব্যক্তিদের এসব পাসপোর্ট আসল নাকি জাল ছিল সেটি নিশ্চিত নয়।
গত ১৬ আগস্ট এক বিবৃতিতে ওই ১০ অর্থপাচারকারী ও জালিয়াতদের আটক করার বিষয়টি জানানো হয়। মূলত সিঙ্গাপুরকে ব্যবহার করে জালিয়াতরা অর্থপাচারসহ অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বাড়িয়ে দেওয়ার পর এর বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেয় দেশটির পুলিশ।
ওই অভিযানের পর দেশটির বাণিজ্য কল্যাণ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পরিচালক ডেভিড চু ঘোষণা দিয়েছিলেন, সিঙ্গাপুরে অবৈধভাবে অর্জিত বা অর্থপাচারের মাধ্যমে গড়া সম্পত্তির সন্ধান পাওয়া গেলেই সেগুলো জব্দ করা হবে। তিনি আরও জানিয়েছিলেন, কোনোভাবেই সিঙ্গাপুরকে ব্যবহার করে জালিয়াতি এবং অর্থপাচারের মতো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করতে দেওয়া হবে না। এসবের প্রমাণ পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে তিনি বলেছিলেন, ‘সিঙ্গাপুরকে নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে অথবা আমাদের ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে ব্যবহার করে অপরাধ সংঘটিত করা অপরাধী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে আমাদের জিরো টলারেন্স নীতি রয়েছে।’
‘অপরাধীদের প্রতি আমাদের বার্তা খুবই সহজ— যদি আপনাদের ধরতে পারি, আমরা আপনাদের আটক করব। যদি আপনার কাছে অবৈধ উপায়ে অর্জিত সম্পদ পাই, আমরা সেগুলো জব্দ করব। আমরা আইনের সর্বোচ্চটা ব্যবহার করে অপরাধীদের সঙ্গে ডিল করব।’
সূত্র: নিউ স্ট্রেইট টাইমস
এমটিআই