এবার চীনের মানচিত্র প্রত্যাখ্যান ফিলিপাইন-তাইওয়ান-মালয়েশিয়ার
অরুণাচলকে নিজেদের ভূখণ্ড দাবি করে সম্প্রতি যে ‘স্ট্যান্ডার্ড’ মানচিত্র প্রকাশ করেছে চীন, তা ইতোমধ্যে প্রত্যাখ্যান করেছে ভারত। এবার দেশটির দক্ষিণ চীন সাগর বিষয়ক মানচিত্র প্রত্যাখ্যান করল এই সাগরপাড়ের দুই দেশ ফিলিপাইন-মালয়েশিয়া ও স্বায়ত্বশাসিত দ্বীপ ভূখণ্ড তাইওয়ান।
বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত ও প্রতিযোগীতাপূর্ণ বাণিজ্য জলপথ দক্ষিণ চীন সাগর। প্রতি বছর ৩ লাখ কোটি টাকার বাণিজ্যপণ্য চলাচল করে এই জলপথ দিয়ে। সোমবার দক্ষিণ চীন সাগরের একটি নতুন ‘স্ট্যান্ডার্ড’ মানচিত্র প্রকাশ করেছে বেইজিং। দেখতে ইংরেজি অক্ষর ‘ইউ’র মতো সেই মানচিত্রে সাগরের ৯০ শতাংশ এলাকা কভার করা হয়েছে বলে দাবি করেছে ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট সরকার।
মানচিত্রটি পর্যালোচনা করে বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ২০০৯ সালে জাতিসংঘে দক্ষিণ চীন সাগরের যে মাণচিত্রটি পেশ করেছি চীন, সেটির তুলনায় নতুনটিতে সাগরের আরও বেশি এলাকা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। পুরোনো সেই মানচিত্রটিতে ‘৯টি ড্যাশ লাইন’ ছিল, যার মাধ্যমে ওই সাগরে ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের সমুদ্রসীমার বেশ কিছু অংশ নিজেদের এলাকাভুক্ত করার অভিযোগ ওঠে চীনের বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন : অরুণাচলকে যুক্ত করে মানচিত্র প্রকাশ, চীনকে কঠোর বার্তা দিল ভারত
নতুন মানচিত্রটিতে ১০টি ড্যাশ লাইন রয়েছে এবং দশম ড্যাশ লাইনে স্বায়ত্বশাসিত দ্বীপভূখণ্ড তাইওয়ানের সমুদ্রসীমার কিছু অংশ চীন নিজেদের এলাকাভুক্ত করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। রয়টার্স জানিয়েছে, সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের আগের বছর ১৯৪৮ সালে দক্ষিণ চীন সাগরের যে মানচিত্র প্রকাশ করেছিল চীন, সেটির সঙ্গে মিল রয়েছে নতুনটির।
চীনের এই নতুন মানচিত্র সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে তাইওয়ানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জেফ লিউ রয়টার্সকে বলেন, ‘তাইওয়ান কোনোভাবেই গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের অংশ নয়। চীন যতই তাইওয়ানের সার্বভৌমত্ব নিয়ে নড়বড়ে অবস্থায় থাকুক, তাদের কোনো কৌশলই স্বাধীন দেশ হিসেবে তাইওয়ানের অস্তিত্বকে ধ্বংস করতে পারবে না।’
দক্ষিণ চীন সাগরের তীরবর্তী অপর দেশ ফিলিপাইনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে চীনকে আরও ‘দায়িত্বশীল’ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছে, ‘আন্তর্জাতিক আইন ও ২০১৬ সালে জাতিসংঘের সালিশী অনুসারে, দক্ষিণ চীন সাগরে কথিত ড্যাশ লাইনের কোনো আইনগত ভিত্তি নেই।’
মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, নতুন মানচিত্র ইস্যুতে চীনের বিরুদ্ধে কূটনৈতি প্রতিবাদের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার।
উল্লেখ্য যেদিন দক্ষিণ চীন সাগরের নতুন মানচিত্র প্রকাশ করেছে চীন— সেই একই দিন সোমবার ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য অরুণাচলকে নিজ ভূখণ্ডের অংশ দাবি করে নতুন আরও একটি মানচিত্র প্রকাশ করেছে বেইজিং।
নতুন মানচিত্রের প্রতিবাদ জানিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি গত ২৯ আগস্ট এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে আজ আমরা চীনের কথিত ২০২৩ স্ট্যান্ডার্ড মানচিত্রের কঠোর প্রতিবাদ জানিয়েছি। যে মানচিত্রে ভারতের অঞ্চলকে নিজেদের অঞ্চল হিসেবে দাবি করেছে চীন।’
এসএমডব্লিউ