পশ্চিমবঙ্গের নামে দিবসের প্রস্তাব, আলোচনায় রাজ্য সঙ্গীত
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ৪ সেপ্টেম্বর বিধানসভায় পেশ হতে পারে ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ প্রস্তাব। এছাড়া ওই দিনই ঠিক করা হতে পারে রাজ্য সঙ্গীত।
আনন্দবাজারের খবরে বলা হয়, আগামী মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ বিষয়ে সর্বদলীয় একটি বৈঠকের ডাক দিয়েছেন। সেখানে সব রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
এর আগে ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ কবে, তা ঠিক করতে একটি কমিটি গঠন করা হয়। সাবেক তৃণমূল সাংসদ ও ইতিহাসবিদ সুগত বসুকে উপদেষ্টা করে ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস নির্ধারণ কমিটি’ করা হয়। এতে আহ্বায়ক করা হয় বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
অপরদিকে গত শুক্র ও সোমবার বিধানসভায় এ নিয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। শেষ বৈঠকে পহেলা বৈশাখ ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ হিসেবে পালন করার সুপারিশ করা হয়েছে।
আনন্দবাজার জানায়, সর্বদলীয় বৈঠকে ডাক পেয়েছে তৃণমূল, বিজেপি, কংগ্রেস, সিপিএম-সহ বামফ্রন্টের শরিক দলগুলো। সেই বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গ দিবস কবে, তা ঠিক করা হবে। তবে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় প্রস্তাব এনে সরকারি দল ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’কে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিতে চাইছে।
বিধানসভা সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমটি জানায়, আগামী ৪ সেপ্টেম্বর বিধানসভায় বাদল অধিবেশন শেষ হচ্ছে। অধিবেশনের শেষ দিনেই এ বিষয়টি চূড়ান্ত করে ফেলতে চাইছে রাজ্য সরকার। তাই মুখ্যমন্ত্রী যেমন নবান্নের সর্বদলীয় বৈঠকে হাজির হবেন, তেমনই ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’কে স্বীকৃতি দিতেও বিধানসভার বিতর্কে অংশ নিতে পারেন তিনি। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, রাজ্য বিজেপি ২০ জুন ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ হিসেবে পালন করে। কারণ, ১৯৪৭ সালের ২০ জুন বঙ্গীয় প্রাদেশিক আইনসভার ভোটাভুটিতে বাংলা ভাগের বিষয়টি স্থির হয়েছিল। বাংলা দু’ভাগে ভাগ হয়ে পূর্ব পাকিস্তান এবং পশ্চিমবঙ্গ তৈরি হয়। পশ্চিমবঙ্গ ভারতে অন্তর্ভুক্ত হয়। যার কৃতিত্ব বিজেপি রাজনৈতিকভাবে জনসঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতা শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে দেয়। সেই ভোটাভুটি হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভাতেই। আর সেই বিধানসভাতেই প্রস্তাব পাশ করিয়ে বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ দিবসের রাজনীতিকে পাল্টা জবাব দিতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী।
গত ২০ জুন রাজভবনে ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ পালন করেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। কিন্তু ২০ জুনকে ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ মানতে নারাজ মুখ্যমন্ত্রী। প্রথমে ফোনে অনুরোধ জানিয়ে ও পরে চিঠি লিখে রাজ্যপালকে এই আয়োজন থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ করেছিলেন মমতা। কিন্তু নিজের অবস্থানে অনড় থেকে রাজভবনে ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ পালন করেন আনন্দ বোস।
তাই এবার পাল্টা ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ ঘোষণা করে বিজেপি ও রাজভবনকে জবাব দিতে চান মুখ্যমন্ত্রী। তাই সর্বদলীয় বৈঠক করে সব রাজনৈতিক দলকে তার এই উদ্যোগে সামিল করতে কৌশলী চাল দিয়েছেন মমতা।
এমএসএ