চন্দ্রাভিযানে ভারতের খরচ হলো কত?
চাঁদের অনাবিষ্কৃত দক্ষিণ মেরুতে প্রথম কোনও দেশ হিসেবে নিজেদের মহাকাশযান চন্দ্রযান-৩ এর সফল অবতরণ করেছে ভারত। বুধবার ভারতের স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ৪মিনিটে চাঁদের মাটি স্পর্শ করে ইতিহাস গড়েছে চন্দ্রযান-৩। পৃথিবীর আর কোনও দেশ সেখানে এখন পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেনি। ঐতিহাসিক এই মুহূর্তের সাক্ষী হতে ভারতীয়দের পাখির চোখ ছিল চন্দ্রপৃষ্ঠের অনাবিষ্কৃত দক্ষিণ মেরুতে।
ভারতজুড়ে আনন্দের বন্যা শুরু হয়েছে সফল এই অভিযান ঘিরে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গর্বের সাথে বলেছেন, আমাদের এই অভিযানের সুফল কেবল ভারত নয়, বরং পুরো বিশ্ব ভোগ করবে। ব্রিকসের সম্মেলনে যোগ দিতে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে রয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। সেখান থেকে সরাসরি ভিডিও লিংকে যুক্ত হয়ে দেশবাসীর সঙ্গে গর্বের এই মুহূর্তের সাক্ষী হয়েছেন তিনি।
দেশটি চন্দ্রযান-৩ চাঁদে কোনও ধরনের ঝামেলা ছাড়াই সফলভাবে অবতরণ করার পর ভারতের মহাকাশযাত্রার খরচ নিয়ে আবারও আলোচনা শুরু হয়েছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় কম অর্থ ব্যয়ে কীভাবে সফল চন্দ্রাভিযান চালাল ভারত, সেটিও নতুন করে আলোচনা উসকে দিয়েছে।
আরও পড়ুন: চাঁদের অজানা অংশ যেভাবে ছুঁয়ে ফেলল ভারত
ভারতের চন্দ্রযান-৩ কে চাঁদে পাঠানোর এই মিশনে খরচ হয়েছে ৬ দশমিক ১ বিলিয়ন রুপি (সাড়ে ৭ কোটি ডলার)। বাংলাদেশি প্রায় ৮২০ কোটি ৮০ লাখ ৭ হাজার ৫০০ টাকা। যা গত রোববার চাঁদের পৃষ্ঠে বিধ্বস্ত হওয়া রাশিয়ার মহাকাশযান লুনা-২৫ এর পেছনে ব্যয় (২০০ মিলিয়ন ডলার) হওয়া অর্থের অর্ধেকেরও কম।
ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতের পূর্ববর্তী চাঁদ ও মঙ্গল মিশনগুলোও অল্প খরচে পরিচালিত হয়েছে। অর্থ অপচয় রোধে দেশটির মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর প্রচেষ্টাকে কৃতিত্ব দেন ভারতীয়রা।
কেন ভারতের মঙ্গল মিশনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চেয়েও কম খরচ হয়েছে তা ব্যাখ্যা করে ব্রিটেনের মহাকাশ বিজ্ঞানী অধ্যাপক অ্যান্ড্রু কোটস বিবিসিকে বলেছেন, ভারত মঙ্গল নভোযানের পেলোড ১৫ কেজিতে সীমিত রেখেছিল, যা সফল মিশনটিকে তুলনামূলক ‘ছোট’ রেখেছে।
ইসরোর জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানীরা বিবিসি তামিলকে বলেছেন, ভারতের উৎক্ষেপণ খরচ এখন আরও কম হতে পারে। কারণ দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য তামিলনাড়ুর কুলাসেকারাপট্টিনামে একটি নতুন মহাকাশবন্দর নির্মাণের পরিকল্পনা চলছে। এই ধরনের অভিযানের আদর্শ উৎক্ষেপণ অবস্থানের সেই বন্দরটি পরিবহন খরচ কমাবে।
এসএস