চীনের ডিএনএতে আধিপত্যবাদ নেই : শি জিনপিং
চীনের ডিএনএতে আধিপত্যবাদ নেই বলে মন্তব্য করেছেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। একইসঙ্গে আরও ন্যায়সঙ্গত ও পক্ষপাতশূন্য আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর জোট ব্রিকসের সম্প্রসারণের আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে জিনপিংয়ের পক্ষে দেওয়া বক্তব্যে একথা বলা হয়। বুধবার (২৩ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে ব্রিকস জোটের শীর্ষ সম্মেলন শুরু হয়েছে। এদিন শীর্ষ সম্মেলনের শুরুতে এক বিজনেস ফোরামে চীনের প্রেসিডেন্টের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন চীনা বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাও।
সেখানে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, ‘বড় শক্তির প্রতিযোগিতায় জড়ানো বা ‘গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব’ সৃষ্টি করার কোনও ইচ্ছাই চীনের নেই। চীন দৃঢ়ভাবে ইতিহাসের সঠিক দিকেই দাঁড়িয়ে আছে এবং সবার মঙ্গলের জন্য ন্যায়সঙ্গত পথ অনুসরণ করা উচিত বলে (চীন) বিশ্বাস করে।’
শি বলেন, ‘যে কোনও বাধাই আসুক না কেন’ ব্রিকসের পরিধি বাড়তে থাকবে। তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে, আমাদের সময়ে বিশ্বে পরিবর্তনগুলো এমনভাবে উদ্ভাসিত হচ্ছে যা আগে কখনও হয়নি, যা মানব সমাজকে একটি জটিল সন্ধিক্ষণে নিয়ে যাচ্ছে।’
আল জাজিরা বলছে, দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এরপরও চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং সেখানে কেন অংশগ্রহণ করেননি তা স্পষ্ট নয়।
এর আগে শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজক দেশ দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসার সাথে দেখা করেন শি জিনপিং। সেখানে চীনা এই প্রেসিডেন্ট তাকে বলেন, তাদের দেশগুলো ‘নতুন এক ঐতিহাসিক সূচনা পয়েন্টে’ দাঁড়িয়ে আছে।
কাতারভিত্তিক এই সংবাদমাধ্যম বলছে, চীন এবং রাশিয়া উভয়ই প্রবলভাবে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার শিকার হয়েছে। আর এই কারণে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং নানা ইস্যুগুলোতে পশ্চিমা দেশগুলোর আধিপত্যের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে ব্রিকসের পরিধি আরও প্রসারিত করতে আগ্রহী এই দুই দেশ।
তবে ব্রিকসের সম্প্রসারণ নিয়ে জোটটির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ভারতের অবস্থান ঠিক কী, সেটা নিয়ে দেশটি তার অবস্থান খোলসা করেনি। এমন কী কোন কোন দেশকে ভারত এই ক্ষেত্রে সমর্থন করবে সেটাও এখনও কিছু জানায়নি।
যদিও বাংলাদেশ নিজেও ব্রিকসের সদস্যপদ পেতে আগ্রহী এবং চীনও এ বিষয়ে ইতিবাচক।
তবে সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে বিবিসি বলেছে, ব্রিকসে চীন বা রাশিয়া তাদের প্রভাব বলয়ে থাকা বা তাদের বন্ধু দেশগুলোকে বেশি বেশি করে ঢুকিয়ে জোটের ‘ভারসাম্য যাতে বিঘ্নিত করতে না-পারে’ ভারত সে ব্যাপারে খুবই সতর্ক ও সাবধানী থাকতে চাইছে।
আল জাজিরা বলছে, সৌদি আরব, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, আর্জেন্টিনা এবং মিশরসহ আরও কিছু দেশ ব্রিকসে যোগ দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ব্রিকস বর্তমানে ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা নিয়ে গঠিত এবং এটি বিশ্বের প্রায় ৪০ শতাংশ জনসংখ্যার প্রতিনিধিত্ব করে।
এছাড়া বৈশ্বিক অর্থনীতিতে এই দেশগুলোর আকার ২৫ শতাংশেরও বেশি।
টিএম