এই মুহূর্তে আমি মুসলিমদের ভোট চাই না: আসামের মুখ্যমন্ত্রী
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেছেন, তিনি মুসলিমদের ভোট চান না। এমনকি নিজে ‘ভোট ব্যাংকের রাজনীতিতে’ জড়িত নন বলেও দাবি করেছেন তিনি।
আর তাই কংগ্রেসের মতো মুসলিম সম্প্রদায়ের সাথে সম্পর্কিত বিষয়গুলোর সাথে রাজনীতিকে যুক্ত করবেন না বলেও দাবি করেছেন আসামের এই মুখ্যমন্ত্রী। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেছেন তিনি।
এনডিটিভিকে দেওয়া এক্সক্লুসিভ ওই সাক্ষাৎকারে হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, ‘এই মুহূর্তে, আমি মুসলিমদের ভোট চাই না। ভোটব্যাংকের রাজনীতির কারণে সব সমস্যার সৃষ্টি হয়... আমি মাসে একবার মুসলিমদের এলাকায় যাই, তাদের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হই এবং মানুষের সাথে দেখা করি। কিন্তু আমি রাজনীতিকে উন্নয়নের সাথে যুক্ত করি না। কংগ্রেসের সাথে মুসলিমদের সম্পর্ক যে কেবল ভোটের জন্য, আমি চাই তারা (মুসলিমরা) এটা উপলব্ধি করুক।’
তিনি বলেন, ‘আমাকে ভোট দেবেন না। আমাকে আগামী ১০ বছরে আপনাদের এলাকার উন্নয়ন করতে দিন। আমি বাল্যবিবাহ প্রথার অবসান নিশ্চিত করতে চাই, মাদ্রাসায় যাওয়া বন্ধ করতে চাই। (মাদ্রাসার) পরিবর্তে কলেজে যান। আমি বিশেষ করে মুসলিম মেয়েদের জন্য সাতটি কলেজ উদ্বোধন করতে যাচ্ছি।’
ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্য আসামে বিজেপির টানা দ্বিতীয় জয়ের পরে ২০২১ সালে রাজ্যটির ১৫তম মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে সর্বানন্দ সোনোয়ালের স্থলাভিষিক্ত হন হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। তিনি বলেন, ‘কংগ্রেস মুসলিম এলাকায় পরিকাঠামো বা স্কুল তৈরি করেনি। কিন্তু আমি তাদের উন্নয়ন করতে চাই। আমি ১০-১৫ বছর ধরে এটি করব, তারপর আমি মুসলমানদের কাছে ভোট চাইব। এখন যদি আমি তাদের কাছ থেকে ভোট চাই তবে তা হবে গিভ অ্যান্ড টেক (দেওয়া-নেওয়ার) সম্পর্ক। আমি চাই না, এটি কোনও ধরনের লেনদেনের সম্পর্ক হোক।’
হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, তিনি গত রাজ্য নির্বাচনেও মুসলিম এলাকায় প্রচার না চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
আসামের এই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘২০১৬ এবং ২০২০ সালে নির্বাচনী প্রচারণার সময় আমি মুসলিম এলাকায় যাইনি। আমি বলেছিলাম, আমি নির্বাচনে জয়ী হলেই যাব। এমনকি এবারও আমি তাদের বলছি, যাকে খুশি ভোট দিন। বিজেপি তাদের এলাকায় প্রচার করবে না।’
এনডিটিভি বলছে, বিজেপি ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে আসামে দ্বিতীয় টানা দ্বিতীয় মেয়াদে জয়লাভ করে। সেসময় ১২৬ আসনের আসাম বিধানসভায় বিজেপি জিতেছিল ৬০টি আসন। এছাড়া বিজেপির জোটের অংশীদার এজিপি নয়টি আসন এবং ইউপিপিএল ছয়টি আসন লাভ করে।
হিমন্ত বিশ্ব শর্মা নিজেও আগে কংগ্রেসের রাজনীতি করতেন। তবে ২০১৫ সালে কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। বলা হয়, তিনিই উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলোকে তার দল বিজেপির দখলে নিয়ে এসেছিলেন এবং এর কৃতিত্বও তাকে দেওয়া হয়।
টিএম