দাবানলে পুড়ে ছাই হাওয়াইয়ের ঐতিহাসিক শহর
যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই রাজ্যে ছড়িয়ে পড়া ভয়াবহ দাবানলে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে সেখানকার ঐতিহাসিক শহর লাহাইনা। প্রশান্ত মহাসাগরে সৃষ্ট হ্যারিকেনের (ঘূর্ণিঝড়) বাতাসের কারণে ইতিহাসে সবচেয়ে বড় দাবানলের কবলে পড়েছে রাজ্যটির মাওইয়ের লাহাইনা শহর।
হ্যারিকেনের বাতাসে অল্প সময়ের মধ্যে অনেক এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে আগুন। যা এখন চলে গেছে নিয়ন্ত্রণের বাইরে।
মার্কিন সিনেটর ব্রায়ান স্ক্যাজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বলেছেন, ‘লাহাইনা মাটির সঙ্গে পুরোপুরি মিশে গেছে।’
বুধবার (৯ আগস্ট) স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দাবানলের আগুনে পুড়ে হাওয়াইয়ের মাওইতে অন্তত ৬ জনের প্রাণ গেছে।
সেখানকার হাসপাতালগুলো আগুনে পোড়া দগ্ধ রোগীতে পূর্ণ হয়ে গেছে। এছাড়া নিশ্বাসের মাধ্যমে শরীরে ধোঁয়া প্রবেশ করায় অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
সিনেটর ব্রায়ান স্ক্যাজ বলেছেন , ‘দমকল কর্মীরা এখনো আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছেন।
বুধবার স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, দ্রুত গতিতে আগুন ছড়িয়ে পড়ায় অনেক মানুষ সমুদ্রের পানিতে লাফিয়ে পড়েন। মার্কিন কোস্টগার্ড জানিয়েছে, তাদের সদস্যরা পানি থেকে এখন পর্যন্ত ১২জনকে উদ্ধার করেছেন।
আরও পড়ুন>>> হাওয়াইয়ে ভয়াবহ দাবানল, জীবন বাঁচাতে সাগরে লাফ দিলেন অনেকে
মাওই কাউন্টির মেয়র রিচার্ড বিসন জুনিয়র এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, সেখানকার অনেক বাড়ি ও বাণিজ্যিক অবকাঠামো পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে।
এই অঞ্চলটিতে ১২ হাজার মানুষ বসবাস করতেন। যার মধ্যে ২ হাজার ১০০ মানুষ ইতোমধ্যে বাস্তুহারা হয়ে গেছেন। স্থানীয় বাসিন্দা শেরি লোভিট সংবাদমাধ্যম হাওয়াই নিউজ নাউকে বলেছেন, ‘বন্দরে যেসব নৌকা ছিল তার সবগুলোই আগুনে পুড়ছে। মনে হচ্ছে এগুলো কোনো ছবির অংশ, যুদ্ধের ছবি।’
মাওইয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দাবানলের কারণে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সেটি এখনই জানা সম্ভব নয়। তারা সতর্কতা দিয়েছেন, মৃতের সংখ্যাও বাড়তে পারে।
লাহাইনা শহরের কয়েকজন বাসিন্দা জানিয়েছেন, তারা তাদের আত্মীয়-স্বজনের খোঁজ খবর পাচ্ছেন না। তিয়ারি লরেন্স নামে একজন হাওয়াই নিউজ নাউকে বলেছেন, ‘আমি এখনো জানি না আমার ছোট ভাই কোথায়। আমার বাবা কোথায় তাও জানি না। লাহাইনার যাদের আমি চিনি তাদের সবার ঘর আগুনে পুড়ে গেছে।’
এদিকে দাবানলের কারণে সেখানকার প্রায় সব বাসিন্দা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। এছাড়া সেখানকার মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যবস্থাও ভেঙে পড়েছে। তাই কেউ কারও খোঁজ নিতে পারছেন না।
সূত্র: বিবিসি
এমটিআই