ফ্রান্সের সঙ্গে সামরিক সম্পর্ক ছিন্ন করল নাইজারের জান্তা
সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গত মাসে মধ্য আফ্রিকার দেশ নাইজারের ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজোমকে অবরুদ্ধ করে গত ২৬ জুলাই রক্তপাতহীন অভ্যুত্থান ঘটায় তারা। আর অভ্যুত্থানের পর দেশটির সাধারণ মানুষ ও সেনাদের মধ্যে ফ্রান্স বিরোধী কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পায়।
অভ্যুত্থান সমর্থনকারীরা ফরাসি দূতাবাসে হামলা চালায়। ফ্রান্স বিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দেয়।
আর সাধারণ মানুষের এসব ফরাসি বিরোধী কর্মকান্ডের মধ্যেই— ফ্রান্সের সঙ্গে সামরিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে ক্ষমতা দখলকারী জান্তা। ১৯৭৭ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত হওয়া অন্তত পাঁচটি চুক্তি বাতিল করার ঘোষণা দিয়েছে তারা।
বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) জান্তা প্রতিনিধি আমাদু আব্দরহমানে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে চুক্তি বাতিলের ঘোষণাপত্রটি পড়ে শোনান। তিনি জানান ফ্রান্সকে এ ব্যাপারে কূটনৈতিকভাবে অবহিত করা হবে। জান্তার এমন ঘোষণার পর তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি ফ্রান্স।
সামরিক ও নিরাপত্তা চুক্তি ছাড়াও ফ্রান্সের অর্থায়নে পরিচালিত সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রচার-প্রচারণাও বন্ধ করে দিয়েছে সামরিক জান্তা।
গত বছর মালি ও বুরকিনা ফাসোতে সামরিক অভ্যুত্থানের ঘটনা ঘটে। দুই দেশেই অভ্যুত্থানের পর ফ্রান্স বিরোধী কর্মকান্ড দেখা গিয়েছিল। এমনকি ওই দুই দেশ তাদের ভূমি থেকে ফ্রান্সের সেনাদের বেরও করে দিয়েছিল। বের করে দেওয়া সেনাদের বেশিরভাগই গিয়েছিল নাইজারে। বর্তমানে দেশটিতে ফ্রান্সের এক থেকে দেড় হাজার সেনা রয়েছে। এখন এসব সেনাদের বের করে দেওয়া হয় কিনা এ নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
নাইজার, মালি ও বুরকিনা ফাসোতে আইএসআইএস ও আল কায়েদা বিরোধী অভিযান চালাতে ফ্রান্সের সেনারা সেখানে অবস্থান করছিল।
তবে ফরাসি সৈন্যরা সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে দমনে খুব বেশি কিছু করেনি বলে দাবি সাধারণ মানুষের। এমনকি তাদের উপস্থিতির কারণে এসব গোষ্ঠী আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এ কারণে ফ্রান্সের সেনাদের প্রতি তাদের ক্ষোভ ছিল।
এদিকে নাইজারের অবরুদ্ধ প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজোয়াম শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য চেয়েছেন। সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টে একটি লেখার মাধ্যমে তিনি বলেছেন, তাকে উদ্ধারে এবং নাইজারে সাংবিধানিক শাসন প্রতিষ্ঠায় যেন যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমারা এগিয়ে আসেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট বাজোমকে ছেড়ে দিতে ইতোমধ্যে জান্তার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
এমটিআই