মৌসুমি বর্ষণ : এক মাসে পাকিস্তানে নিহত ১৬৮
প্রবল মৌসুমি বর্ষণ ও তার জেরে সৃষ্ট বিভিন্ন দুর্যোগ-দুর্ঘটনায় গত এক মাসে পাকিস্তানজুড়ে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১৬৮ জন। এই নিহতদের মধ্যে ৬৯ জনই শিশু ও অপ্রাপ্তবয়স্ক। এছাড়া আহত হয়েছেন ২৫০ জনেরও বেশি সংখ্যক মানুষ।
বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে চলতি বছরের ২৫ জুন থেকে ২৭ জুলাই পর্যন্ত অতিবর্ষণজনিত বিভিন্ন দুর্যোগ-দুর্ঘটনায় মৃতদের সংখ্যা ও বাড়িঘর ধ্বংসের পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় দুর্যোগ মোকাবিলা দপ্তর (ন্যাশনাল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি-এনডিএমএ)। সেখানেই উল্লেখ করা হয়েছে এসব তথ্য।
এনডিএমএ’র বিবৃতি অনুসারে, সবচেয়ে বেশি নিহতের ঘটনা ঘটেছে দেশটির সবচেয়ে জনবহুল প্রদেশ পাঞ্জাবে। ৬৭ জন মারা গেছেন এই প্রদেশটিতে।
এছাড়া এই সময়সীমায় খাইবার পাখতুনখোয়ায় ৪৬ জন, সিন্ধে ২১ জন এবং বাকি মৃতরা বেলুচিস্তান, ইসলামাবাদ, গিলগিট-বালটিস্তান এবং আজাদ কাশ্মিরের বলে বলে জানিয়েছে এনডিএমএফ।
এই মৃতদের অনেকে অতি বর্ষণজনিত কারণে আকস্মিক বা হড়কা বান, কেউ ভূমিধস, কেউ বাড়িঘরের ছাদ ধস এবং কেউ বা বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মারা গেছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে বিবৃতিতে।
এখনও পাকিস্তানের বিভিন্ন এলাকায় মুষলধারে বর্ষণ হচ্ছে উল্লেখ করে এনডিএমএর কর্মকর্তারা আমিরাতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজকে জানিয়েছেন, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টার বৃষ্টিতে পাকিস্তানে আরও ১১ জন মারা গেছে।
দেড়শতাধিক মৃত্যুর পাশাপাশি গত এক মাসে বর্ষণজনিত নানা দুর্যোগে পাকিস্তানে হাজারেরও বেশি বাড়িঘরও ধ্বংস হয়েছে। এনডিএমএর বিবৃতি অনুসারে, গত একমাসে পাকিস্তানের চার প্রদেশ ও দুই কেন্দ্রশাসিত এলাকায় অন্তত ১ হাজার ২০০ ঘরবাড়ি আংশিক বা সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে।
সবচেয়ে বেশি ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে সিন্ধ প্রদেশে— ৪৪২টি। এছাড়া বেলুচিস্তানে ৩০২টি এবং খাইবার পাখতুনখোয় ২৯৯টি বাড়িঘর ধ্বংস হয়েছে। অতিবর্ষণ ও বন্যায় গত এক মাসে পাকিস্তানজুড়ে মারা গেছে প্রায় ৩৭৪টি গবাদিপশুও।
আরও বর্ষণের পূর্বাভাস
এদিকে, দেশটির কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তর পাকিস্তান মেটেরোলজিক্যাল ডিপার্টমেন্ট (পিএমডি) জানিয়েছে, আগামী ৩০ জুলাই পর্যন্ত পাকিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চলে মুষলধারে বর্ষণ অব্যাহত থাকবে। খাইবার পাখতুনখোয়া ও আজাদ কাশ্মিরসহ বিভিন্ন এলাকায় ভূমিধস ঘটতে পারে বলেও উল্লেক করা হয়েছে পিএমডির সর্বশেষ পূর্বাভাসে।
বৃহস্পতিবারের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ‘আগামী ৩০ জুলাই পর্যন্ত প্রবল বৃষ্টির কারণে ইসলামাবাদ, রওয়ালপিন্ডি, পেশোয়ার, গুজরাটওয়ালা, লাহোর, ফয়াসালবাদের শহর ও নিম্নাঞ্চলগুলোতে বন্যা দেখা দিতে পারে। এর বাইরে একই কারণে ভূমিধসের ঝুঁকিতে রয়েছে মুরি, গালিয়াত, আজাদ কাশ্মির, গিলগিট বালটিস্তান এবং খাইবার পাখতুনখোয়ার পাহাড়ি এলাকাগুলো।’
সূত্র : গালফ নিউজ
এসএমডব্লিউ