বেসামরিক জাহাজে হামলা চালাতে পারে রাশিয়া, হুঁশিয়ারি যুক্তরাজ্যের
শর্ত পূরণ না হওয়ার অজুহাতে কৃষ্ণসাগর শস্যচুক্তি থেকে সরে গেছে রাশিয়া। এছাড়া শস্যচুক্তি থেকে সরে যাওয়ার পর ইউক্রেনীয় বন্দরগুলোতে হামলা জোরদার করেছে রুশ সামরিক বাহিনী।
এই পরিস্থিতিতে রাশিয়া কৃষ্ণসাগরে বেসামরিক জাহাজে হামলা করা শুরু করতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে যুক্তরাজ্য। বুধবার (২৬ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ার সামরিক বাহিনী কৃষ্ণসাগরে বেসামরিক জাহাজকে হামলার লক্ষ্যবস্তু করতে শুরু করতে পারে বলে সতর্ক করেছে যুক্তরাজ্য। দেশটির দাবি, তার কাছে এমন তথ্য রয়েছে।
অন্যদিকে ইউক্রেনের প্রায় সমস্ত কৃষি পণ্য রেল ও সড়কের মাধ্যমে রপ্তানি করতে সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। যদিও শস্যচুক্তি থেকে রাশিয়া বেরিয়ে যাওয়ার পর থেকে বিশ্বব্যাপী গমের দাম ১৫ শতাংশ বেড়ে গেছে বলে জানিয়েছে আল জাজিরা।
জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূত বারবারা উডওয়ার্ড মঙ্গলবার বলেছেন, ‘আমাদের কাছে যে তথ্য রয়েছে তাতে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে- রাশিয়ান সামরিক বাহিনী ইউক্রেনের শস্য অবকাঠামোকে লক্ষ্য করে হামলা আরও প্রসারিত করতে পারে এবং কৃষ্ণসাগরে বেসামরিক জাহাজের বিরুদ্ধেও হামলা চালাতে পারে।’
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক মঙ্গলবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় এই তথ্য জানিয়েছেন বলে উডওয়ার্ড সাংবাদিকদের বলেছেন। তিনি বলেন, ‘রাশিয়া ইউক্রেনীয় বন্দরগুলোতে যাওয়ার পথে অতিরিক্ত সমুদ্র মাইন স্থাপন করে রেখেছে’ বলেও ব্রিটেনের কাছে তথ্য রয়েছে।
উডওয়ার্ড বলেন, ‘কৃষ্ণসাগরে বেসামরিক জাহাজে হামলার ন্যায্যতা প্রমাণ করা এবং এই হামলার জন্য ইউক্রেনকে দায়ী করতে রাশিয়ার সমন্বিত প্রচেষ্টার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের যে মূল্যায়ন রয়েছে; ব্রিটেন তার সঙ্গে একমত।’
মূলত হোয়াইট হাউসও গত সপ্তাহে কৃষ্ণসাগরে বেসামরিক জাহাজে সম্ভাব্য হামলা এবং সামুদ্রিক মাইন পেতে রাখার বিষয়ে একই রকম সতর্কতা দিয়েছে।
এর আগে নিজেদের শর্ত পূরণ না হওয়ায় কৃষ্ণসাগর শস্যচুক্তি থেকে সরে আসার ঘোষণা দেয় রাশিয়া। এক বছর আগে তুরস্ক ও জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে এ চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। চুক্তির মাধ্যমে কৃষ্ণসাগর দিয়ে নির্বিঘ্নে আন্তর্জাতিক বাজারে যেতে পারত ইউক্রেনের খাদ্যশস্য।
তবে গত ১৭ জুলাই চুক্তিটির মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। এরপর রাশিয়া সেটির মেয়াদ বাড়াতে অস্বীকৃতি জানায়। যদিও রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয়ই বর্তমান বিশ্বের প্রধান শস্য রপ্তানিকারক দেশ।
আর এরপর কৃষ্ণসাগরে জাহাজ ঢুকলেই তাতে হামলার ইঙ্গিত দেয় রাশিয়া। গত সপ্তাহে এক বিবৃতিতে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ইঙ্গিত দেয়, রাশিয়ার সম্মতি ছাড়া ইউক্রেনের শস্য নিতে, কৃষ্ণসাগরে যদি কোনো জাহাজ প্রবেশ করে সেটির ওপর হামলা চালানো হবে। কারণ এসব জাহাজকে অস্ত্রবাহী হিসেবে বিবেচনা করা হবে।
অবশ্য জাতিসংঘ বলছে, গুরুত্বপূর্ণ এই চুক্তি ২০২২ সালের মার্চ মাস থেকে বিশ্বব্যাপী খাদ্য মূল্য ২৩ শতাংশ কমিয়ে দরিদ্র দেশগুলোকে উপকৃত করেছে।
টিএম