পরিবেশকর্মী গ্রেটাকে সুইডিশ আদালতের জরিমানা
পুলিশি নির্দেশ উপেক্ষা করে বিক্ষোভ করার এক মামলায় সুইডেনের পরিবেশ আন্দোলনের কর্মী গ্রেটা থুনবার্গকে দোষী সাব্যস্ত করেছে দেশটির একটি আদালত। গত মাসে দেশটির মালমো বন্দর অবরোধ করার অভিযোগে করা মামলায় সোমবার তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাকে জরিমানাও করেছে মালমোর আদালত।
সুইডিশ পার্লামেন্টের সামনে দিনের পর দিন বিক্ষোভ করে বিশ্বজুড়ে তরুণ জলবায়ু কর্মীদের আন্দোলনের মুখ হয়ে ওঠেন ২০ বছর বয়সী গ্রেটা থুনবার্গ।
সোমবার আদালতের কাছে তিনি পুলিশের আদেশ অমান্য করেছিলেন বলে স্বীকার করেছেন। তবে তিনি দোষী নন বলে দাবি করেছেন। সুইডিশ এই জলবায়ু আন্দোলনকর্মী বলেছেন, তিনি প্রয়োজনের স্বার্থে মালমো বন্দর অবরোধ করেছিলেন।
আদালতের বাইরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে গ্রেটা থুনবার্গ বলেছেন, যারা বিজ্ঞানের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ কাজ করেন, তাদের এর জন্য মূল্য দিতে হবে; এটা অযৌক্তিক।
মালমোর আদালত তরুণ এই জলবায়ুকর্মীকে দোষী সাব্যস্ত করে আড়াই হাজার সুইডিশ ক্রোনা জরিমানা করেছে। গত ১৯ জুন মালমো বন্দর অবরোধ করে ‘রিক্লেইম ফর ফিউচার’ নামের পরিবেশ আন্দোলন গ্রুপ ওই বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিল। জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের প্রতিবাদে মালমো বন্দর অবরোধ করে তারা।
পুলিশ অবরোধস্থল থেকে গ্রেটা থুনবার্গ ও অন্যান্য বিক্ষোভকারীদের চলে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। কিন্তু আন্দোলনকারীরা পুলিশি নির্দেশ উপেক্ষা করে বিক্ষোভ করেন। পরে পুলিশ রিক্লেইম ফর ফিউচারের কয়েকজন সদস্যসহ গ্রেটা থুনবার্গের বিরুদ্ধে মালমোর আদালতে মামলা দায়ের করে।
গ্রেটা আদালতকে বলেছেন, আমি বিশ্বাস করি, আমরা এমন একটি জরুরি পরিস্থিতির মাঝে রয়েছি যা জীবন, স্বাস্থ্য এবং সম্পত্তির জন্য হুমকিস্বরূপ। অগণিত মানুষ ঝুঁকির মধ্যে আছেন।
তিনি বলেন, ‘এটা ঠিক যে, আমি সেদিন ওই জায়গায় ছিলাম এবং একটি আদেশ পেয়েছিলাম; যা আমি অমান্য করেছি। কিন্তু এজন্য আমি অপরাধ অস্বীকার করতে চাই।’
বর্তমান বিশ্বের অন্যতম বড় এক সমস্যা জলবায়ু সংকট। এই সংকট মোকাবিলায় বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বরে পরিণত হওয়া সুইডিশ পরিবেশ আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ পরিবেশ আন্দোলনের জন্য গড়ে তুলেছেন ‘ফ্রাইডেজ ফর ফিউচার’ নামের একটি সংগঠন। এই সংগঠনের মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বিশ্ব নেতাদের সতর্ক করার পাশাপাশি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলেছেন তিনি।
কিশোরী বয়সেই পরিবেশ আন্দোলনে যুক্ত হওয়া এবং জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বরে পরিণত হওয়ায় ২০১৯ সালে টাইম ম্যাগাজিনের ‘পারসন অব দ্য ইয়ার’ নির্বাচিত হয়েছিলেন গ্রেটা। এরপর সেই বছর মর্যাদাপূর্ণ নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়ার সম্ভাব্য প্রার্থীও হয়ে উঠেছিলেন তিনি।
স্কুল পালিয়ে জলবায়ু পরিবর্তন রুখতে আন্তর্জাতিক আন্দোলনের প্রতীক হিসেবে বিশ্বজুড়ে পরিচয় পাওয়া সুইডিশ কিশোরী গ্রেটা থুনবার্গ এখন পরিবেশ আন্দোলনের পরিচিত মুখ। তার কথায় অনুপ্রাণিত হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে মানুষ জলবায়ু পরিবর্তন ঠেকাতে আয়োজিত বিক্ষোভে যোগ দেয়।
সূত্র: বিবিসি, রয়টার্স।
এসএস