শস্যচুক্তি নবায়ন না হওয়ায় বেড়ে গেছে গমের দাম
রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যকার কৃষ্ণসাগর শস্যচুক্তির মেয়াদ শেষ হয়েছে গতকাল সোমবার। আর চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার দিনই বিশ্ববাজারে বেড়ে গেছে গম ও ভুট্টার দাম দাম।
গত বছর রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা করার পর— ইউক্রেনের কৃষকদের উৎপাদিত খাদ্যপণ্য— শস্য ভাণ্ডার ও বন্দরগুলোতে আটকে যায়। এতে বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকটের শঙ্কা দেখা দেয়। কারণ বিশ্বে গমসহ অন্যান্য শস্যের বড় একটি অংশের যোগান দেয় দেশটি।
বিশ্ব খাদ্য সংকটের শঙ্কায় পড়ায় ২০২২ সালের জুলাইয়ে তুরস্ক ও জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় কৃষ্ণসাগর শস্য চুক্তি করে রাশিয়া-ইউক্রেন। ওই চুক্তি অনুযায়ী, নির্বিঘ্নে কৃষ্ণ সাগরের বন্দরগুলো দিয়ে আন্তর্জাতিক বাজারে পৌঁছায় ইউক্রেনের শস্য। এক বছরের মধ্যে এই চুক্তির মেয়াদ তিন দফা বাড়ানো হয়েছে।
তবে গতকাল (১৭ জুলাই) চুক্তি থেকে সরে আসার ঘোষণা দেয় রাশিয়া। আর এর প্রভাবে এদিনই আন্তর্জাতিক বাজারে বেড়ে যায় গমের দাম। এছাড়া এর মাধ্যমে নতুন করে আবারও খাদ্য সংকটের শঙ্কায় পড়েছেন বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ।
সংবাদমাধ্যম এবিসিঅ্যাকশন নিউজ জানিয়েছে, সোমবার শিকাগো বোর্ডে প্রতি বুশেল গমের দাম (হুইট ফিউচার) ২ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়ে ৬ দশমিক ৮০ ডলারে পৌঁছে। অপরদিকে প্রতি বুশেল ভুট্টার (ফিউচার কর্ন) দাম ০ দশমিক ৯৪ শতাংশ বেড়ে ৫ দশমিক ১১ ডলারে পৌঁছেছে। পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকার শঙ্কা থেকেই একদিনের ব্যবহানে অতি প্রয়োজনীয় এ দুটি খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে গেছে।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর মার্চে গম ও ভুট্টার দাম সর্বকালের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছিল। তবে ওই সময় সময়ের তুলনায় সোমবার গমের দাম ৫৪ শতাংশ এবং ভুট্টার দাম ৩৭ শতাংশ কম ছিল।
এদিকে রাশিয়া যখন ইউক্রেনের সঙ্গে চুক্তি করে তখন শর্ত ছিল— তাদের উৎপাদিত খাদ্যশস্য ও সার বিনা বাধায় আন্তর্জাতিক বাজারে যেতে দিতে হবে এবং কিছু অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে হবে। রাশিয়া দাবি করছে, তাদের ওই দাবিগুলো পূরণ করা হয়নি; তাই তারা নতুন করে আর চুক্তি করবে না।
যুদ্ধ শুরুর পরই রাশিয়া কৃষ্ণসাগরে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে। ফলে এখন দেশটি চুক্তি থেকে বের হয়ে যাওয়ায় কৃষ্ণ সাগর দিয়ে ইউক্রেনের শস্য আন্তর্জাতিক বাজারে আর যেতে পারবে কিনা— তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
সূত্র: এবিসিঅ্যাকশন নিউজ
এমটিআই