ক্রিমিয়ার সেই সেতুতে যান চলাচল বন্ধ, বিস্ফোরণের খবর
ক্রিমিয়া উপদ্বীপের সাথে রাশিয়াকে সংযুক্তকারী ইউরোপের বৃহত্তম সড়ক ও রেল সেতুতে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সেখানে বিস্ফোরণ হয়েছে কিনা তা না জানালেও রাশিয়া-নিযুক্ত কর্মকর্তারা বলেছেন, ‘জরুরি’ পরিস্থিতির কারণে রাশিয়ান নির্মিত এই সেতুতে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
তবে ইউক্রেনীয় মিডিয়া গুরুত্বপূর্ণ এই সেতুতে বিস্ফোরণের খবর দিয়েছে। সোমবার (১৭ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউরোপের বৃহত্তম এই সেতুটি ক্রিমিয়ান উপদ্বীপকে রাশিয়ার ক্রাসনোদার অঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। ক্রিমিয়ার রাশিয়া-নিযুক্ত গভর্নর সের্গেই আকসিওনভ বলেছেন, সেতুর ১৪৫ নাম্বার স্তম্ভে জরুরি ঘটনা ঘটেছে। এর বাইরে তিনি বিস্তারিত আর কোনো তথ্য জানাননি।
তবে বার্তাসংস্থা আরবিসি-ইউক্রেন জানিয়েছে, এই সেতুতে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।
২০১৪ সালে রাশিয়া ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখল করে নেয়। তবে এটি এখনও আন্তর্জাতিকভাবে ইউক্রেনের অংশ হিসাবে স্বীকৃত।
রাশিয়ার গ্রে জোন চ্যানেল — ওয়াগনার ভাড়াটে গোষ্ঠীর সাথে সম্পৃক্ত এবং ব্যাপকভাবে অনুসরণ করা একটি টেলিগ্রাম চ্যানেল — জানিয়েছে, গুরুত্বপূর্ণ এই সেতুতে সোমবার ভোর ৩টা ৪ মিনিটে এবং ৩টা ২০ মিনিটে দু’টি হামলা হয়েছে।
রয়টার্স অবশ্য স্বাধীনভাবে হামলার এসব প্রতিবেদন যাচাই করতে সক্ষম হয়নি। ইউক্রেনের পক্ষ থেকেও তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
১২ মাইল (১৯ কিলোমিটার) দীর্ঘ এই সড়ক ও রেল সেতুটি গত বছরের অক্টোবরেও একটি বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। ক্রেমলিন সেসময় বলেছিল, ইউক্রেনীয় নিরাপত্তা বাহিনী ওই হামলা চালিয়েছিল। অবশ্য কয়েক মাস পর ইউক্রেন পরোক্ষভাবে ওই হামলার কথা স্বীকার করে।
ক্রিমিয়ার গভর্নর সের্গেই আকসিওনভ এবং ক্রাসনোদর অঞ্চলের গভর্নর ভেনিয়ামিন কনড্রাটিয়েভ বলেছেন, সেতুতে জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য তাদের উভয় অঞ্চলেই অপারেশনাল সদর দপ্তর স্থাপন করা হয়েছে।
ক্রিমিয়া উপদ্বীপের রাশিয়ান-সমর্থিত প্রশাসন বাসিন্দাদের সেতু দিয়ে ভ্রমণ না করার আহ্বান জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে সামরিক অভিযান চালিয়ে ইউক্রেনের কাছ থেকে ক্রিমিয়া দ্বীপের দখল নেয় রাশিয়া। পরে এই দ্বীপের সাথে রাশিয়ার সড়ক ও রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপনের জন্য দীর্ঘ ১৯ কিলোমিটার সেতুটি নির্মাণ করা হয়।
ক্রিমিয়া দ্বীপ দখলে নেওয়ার চার বছর পর ২০১৮ সালে সেতুটিকে রাশিয়ার পরিবহন নেটওয়ার্কের সাথে যুক্ত করে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন মহা ধুমধাম করে সেটির উদ্বোধন করেছিলেন।
ইউক্রেন যুদ্ধে এই সেতু রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এক সরবরাহ রুটে পরিণত হয়েছে। কারণ ইউক্রেনের দক্ষিণের খেরসন অঞ্চলে রুশ সৈন্যদের কাছে অস্ত্র ও সামরিক রসদ পাঠানোর অন্যতম পথ ক্রিমিয়া উপদ্বীপের দীর্ঘ এই সেতুটি।
টিএম