দক্ষিণ ইউরোপ ও উত্তর-পশ্চিম আফ্রিকাজুড়ে মারাত্মক তাপপ্রবাহ
ইউরোপের দক্ষিণাঞ্চল এবং উত্তর-পশ্চিম আফ্রিকার কিছু অংশজুড়ে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এমনকি আগামী দিনগুলোতে এসব অঞ্চলে তাপমাত্রা রেকর্ড ছাড়িয়ে যেতে পারে বলেও শঙ্কা রয়েছে।
এছাড়া স্পেন, ফ্রান্স, গ্রিস, ক্রোয়েশিয়া এবং তুরস্কের কিছু অংশে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যাবে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউরোপে তাপপ্রবাহ রেকর্ড ছাড়ানোর আশঙ্কার মধ্যেই ইতালিতে তাপমাত্রা ৪৮.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত পৌঁছতে পারে। এই পরিস্থিতিতে ফ্লোরেন্স ও রোমসহ ১০টি শহরে রেড অ্যালার্ট সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
এছাড়া গত মঙ্গলবার ইতালির উত্তরাঞ্চলে তীব্র গরমে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। মৃত ওই ব্যক্তির বয়স চল্লিশের কোঠায়।
ইতালীয় মিডিয়া জানিয়েছে, ৪৪ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি পেশায় একজন শ্রমিক এবং গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ার আগে মিলানের কাছে লোদি শহরে রাস্তায় জেব্রা ক্রসিং লাইন পেইন্টিং করছিলেন। পরে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে তার মৃত্যু হয়।
ইতালীয় রাজনীতিবিদ নিকোলা ফ্রেটোয়ান্নি টুইট করে বলেছেন, ‘আমরা অসহনীয় তাপপ্রবাহের মুখোমুখি হচ্ছি। তীব্র গরমে লোদিতে আজকের মতো দুর্ঘটনা এড়াতে সমস্ত দরকারি সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে।’
এছাড়া তাপপ্রবাহের জেরে ইতালিতে ঘুরতে যাওয়া বেশ কয়েকজন পর্যটক ইতোমধ্যেই হিট স্ট্রোকের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এর মধ্যে রোমের কলোসিয়ামের বাইরে এক ব্রিটিশ ব্যক্তিও রয়েছেন। চলমান এই তাপপ্রবাহ আগামী কয়েক দিনের মধ্যে দেশটিতে চরম পরিস্থিতির সৃষ্টি করবে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আবহাওয়া অফিস বলেছে, শুক্রবার ইতালিতে তাপমাত্রা সর্বোচ্চ হবে এবং বিবিসি ওয়েদার বলেছে, দক্ষিণ ইউরোপের বিশাল অংশজুড়ে চল্লিশের ঘরের মাঝামাঝি তাপমাত্রা দেখা যেতে পারে এবং সম্ভবত তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে।
এর আগে ২০২১ সালের আগস্টে ইতালীয় দ্বীপ সিসিলির সিরাকিউসের কাছে ইউরোপের সর্বকালের উষ্ণতম তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল। সেসময় সেখানে তাপমাত্রা উঠেছিল ৪৮.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১১৯.৮ ফারেনহাইট)।
এছাড়া গত বছর গরমের কারণে ইউরোপের দেশগুলোতে ৬০ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছেন। আশঙ্কা করা হচ্ছে, চলমান তাপপ্রবাহ এই গ্রীষ্মেও আরও অনেক মানুষের মৃত্যুর কারণ হতে পারে।
ইউরোপিয়ান সেন্টার ফর মিডিয়াম-রেঞ্জ ওয়েদার বলেছে, গত জুন মাসে যে গরম পড়েছে তা বৈশ্বিক রেকর্ডে ছিল সবচেয়ে উষ্ণ।
সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানায়, মানব সৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় তাপপ্রবাহ আরও ঘন ঘন দেখা দিচ্ছে এবং দিনে দিনে তা আরও তীব্র হয়ে উঠছে। মারাত্মক গরম মানুষের শরীরে নানা ধরনের প্রভাব ফেলে। এটি হিট স্ট্রোকে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটাতে পারে।
এছাড়া প্রচন্ড তাপ কার্ডিওভাসকুলার এবং শ্বাসযন্ত্রের রোগকে বাড়িয়ে দিতে পারে। এতে সবচেয়ে ঝুঁকিতে পড়েন বয়স্ক ব্যক্তিরা।
টিএম