চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে স্বৈরশাসক আখ্যা বাইডেনের
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে স্বৈরশাসক বা একনায়ক হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এছাড়া সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে চীনা গুপ্তচর বেলুন ধ্বংসের ঘটনায় জিনপিং খুবই বিব্রত হয়েছিলেন বলেও দাবি করেছেন তিনি।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২০ জুন) ক্যালিফোর্নিয়ায় তহবিল সংগ্রহের একটি অনুষ্ঠানে বাইডেন এই মন্তব্য করেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মঙ্গলবার চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে একনায়ক হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে একটি চীনা গুপ্তচর বেলুন ধ্বংস করে দেওয়া হলে জিনপিং খুবই বিব্রত হয়েছিলেন।
বেইজিংয়ে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন দেখা করার একদিন পর জো বাইডেন এই মন্তব্য করলেন। মূলত জিনপিং-ব্লিংকেন বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য ছিল বৈশ্বিক এই দুই পরাশক্তি দেশের মধ্যে উত্তেজনা কমানো।
মঙ্গলবার ক্যালিফোর্নিয়ায় তহবিল সংগ্রহের ওই অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং খুবই মর্মাহত হয়েছিলেন যখন আমি সেই গোয়েন্দা বেলুনটিকে গুপ্তচর সরঞ্জামে ভরা দু’টি বক্স গাড়ি দিয়ে গুলি করে নিচে নামিয়ে এনেছিলাম। তিনি (জিনপিং) জানতেনই না, সেখানে এমনটি হতে পারে।’
বাইডেন আরও বলেন, ‘স্বৈরশাসকদের জন্য এটি বড় বিব্রতকর বিষয়, যখন তারা জানতেই পারে না কি ঘটেছে। এটির সেখানে যাওয়ার কথা ছিল না। এটিকে উড়িয়ে (ধ্বংস করে) দেওয়া হয়েছিল।’
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সন্দেহভাজন চীনা একটি গুপ্তচর বেলুন মার্কিন আকাশসীমার ওপর দিয়ে উড্ডয়ন করছিল। সেটি ধ্বংস করে দেওয়ার প্রেক্ষাপটে বেইজিং ও ওয়াশিংটনের মধ্যে সম্পর্কে বড় ধরনের উত্তেজনা দেখা দেয়।
এমনকি সেই ঘটনার পর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন তার নির্ধারিত চীন সফরটি স্থগিত করেছিলেন। যদিও উত্তেজনা কাটাতে সম্প্রতি দেশটিতে সফর করেছেন তিনি।
রয়টার্স বলছে, অ্যান্টনি ব্লিংকেন এবং শি জিনপিং সোমবার তাদের বৈঠকে ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে স্থিতিশীল রাখতে সম্মত হয়েছেন যাতে এটি সংঘর্ষের দিকে না যায়। তবে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর চীনে এই বিরল সফরের সময় কোনও বড় অগ্রগতি করতে ব্যর্থ হয় উভয়পক্ষ।
অবশ্য সামনের দিনগুলোতে মার্কিন কর্মকর্তাদের আরও সফরের সুযোগ দেওয়ার মাধ্যমে চীন-যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পৃক্ততা অব্যাহত রাখতে সম্মত হয়েছে উভয় দেশ।
এর আগে প্রেসিডেন্ট বাইডেন নিজেই সোমবার বলেছিলেন, তিনি মনে করেন দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক সঠিক পথে রয়েছে। এমনকি ব্লিংকেনের সফরের সময় সম্পর্কের অগ্রগতি হয়েছে বলেও সেসময় ইঙ্গিত দেন যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্র্যাটিক এই প্রেসিডেন্ট।
এদিকে বাইডেন মঙ্গলবার আরও বলেছেন, চারদেশীয় কৌশলগত নিরাপত্তা গোষ্ঠী কোয়াড নিয়ে উদ্বিগ্ন শি জিনপিং। এই জোটে জাপান, অস্ট্রেলিয়া, ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্র রয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, তিনি আগে শি জিনপিংকে বলেছিলেন- কোয়াড দিয়ে চীনকে ঘিরে ফেলার চেষ্টা করছে না যুক্তরাষ্ট্র।
চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে যুক্তরাষ্ট্র সফররত ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে বাইডেন দেখা করবেন এবং চীন ইস্যুটি এই দুই নেতার আলোচনার বিষয় হিসেবে থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।
টিএম