গ্রিসে ছয় শতাধিক অভিবাসী নিয়ে নৌকাডুবি, মৃত বেড়ে ৭৮
গ্রিসের ভূমধ্যসাগরীয় পেলোপনিস উপকূলের কাছে অভিবাসীদের বহনকারী নৌকাডুবিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৭৮ জনে দাঁড়িয়েছে। বুধবার ভোরের দিকে নৌকাডুবির এই ঘটনায় জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে আরও শতাধিক অভিবাসীকে।
দেশটির উপকূলরক্ষী বাহিনী বলেছে, দক্ষিণ পেলোপনিসের কাছে ডুবে যাওয়া নৌকাটির বেশিরভাগ অভিবাসীই আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের নাগরিক। পূর্ব লিবিয়া থেকে ইতালির উদ্দেশ্যে যাত্রা করা ওই নৌকায় কয়েকশ অভিবাসী ছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গ্রিসের একজন কর্মকর্তা ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানকে বলেছেন, নৌকাডুবিতে মৃতের সংখ্যা নাটকীয়ভাবে বাড়ছে। প্রতি ঘণ্টায় মরদেহ উদ্ধার করা হচ্ছে। নৌকাটিতে ৬০০ জনের বেশি অভিবাসী ছিলেন বলে ধারণা করছে গ্রিস কর্তৃপক্ষ। তবে ওই নৌকায় ঠিক কতজন অভিবাসী ছিলেন তা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
• আরও পড়ুন: গ্রিস উপকূলে নৌকা উল্টে ৫৯ অভিবাসীর মৃত্যু
তিনি বলেছেন, স্থানীয় সময় বুধবার দুপুর পর্যন্ত প্রায় ১০৪ জন যাত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রিসের রাষ্ট্রায়ত্ত সম্প্রচারমাধ্যম ইআরটি বলছে, পেলোপনিসের কালামাতা শহরে নজিরবিহীন দৃশ্যের অবতারণা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। সাগরে নৌকাডুবির ঘটনায় হতাহতদের উদ্ধারের পর গ্রিসের এই বন্দরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
দেশটির নৌবাহিনীর জাহাজের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর বিমান, উড়োজাহাজ এবং ওই এলাকায় থাকা ছয়টি নৌকা উদ্ধার অভিযানে অংশ নিয়েছে। প্রবল বাতাসের কারণে উদ্ধারকাজ পরিচালনা করা জটিল হয়ে পড়েছে।
গ্রিসের উপকূলরক্ষী বাহিনী এবং ইউরোপের সীমান্ত ও উপকূলরক্ষী সংস্থা ফ্রন্টেক্স মঙ্গলবার সকালের দিকে বিপর্যস্ত নৌকাটির বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছিল। ফ্রন্টেক্সের এজেন্টদের পরিচালিত একটি উড়োজাহাজের পাইলট দক্ষিণ গ্রিসের পাইলোস শহর থেকে প্রায় ৫০ মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমের আন্তর্জাতিক জলসীমায় নৌকাটির অবস্থান প্রথম শনাক্ত করেছিলেন।
এদিকে, পৃথক এক ঘটনায় বুধবার গ্রিসের উপকূলরক্ষী বাহিনী ক্রিট উপকূল থেকে আরও প্রায় ৮০ জন অভিবাসীকে নিয়ে ভাসতে থাকা একটি পালতোলা নৌকা উদ্ধার করেছে।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ভূমধ্যসাগরের সীমান্তবর্তী দেশ ইতালি, স্পেন, গ্রিস, মাল্টা এবং সাইপ্রাসে প্রায় ৭২ হাজার শরণার্থী ও অভিবাসী পৌঁছেছেন। মধ্যপ্রাচ্য, এশিয়া ও আফ্রিকায় যুদ্ধ, নিপীড়ন এবং দারিদ্র্য থেকে পালিয়ে আসা লোকজনের ইউরোপে পাড়ি জমানোর অন্যতম প্রধান রুটে পরিণত হয়েছে গ্রিস।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, রয়টার্স।
এসএস