আবারও প্রকাশ্যে যুক্তরাজ্যের শাসক দলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব
যুক্তরাজ্যের বর্তমান শাসক দল কনজারভেটিভ পার্টির অভ্যন্তরে এক বছরের বেশি সময় ধরে দ্বন্দ্ব চলছে। করোনা মহামারির মধ্যে পার্টি করার দায়ে ‘নিজ দলের সদস্যদের’ চাপে পড়ে গত বছর প্রধানমন্ত্রিত্ব ছাড়তে বাধ্য হন বরিস জনসন।
তিনি পদত্যাগ করার পর পার্টির নেতা নির্বাচিত হয়ে প্রধানমন্ত্রী হন লিজ ট্রাস। কিন্তু মাত্র ৪৫ দিন প্রধানমন্ত্রী থাকার পর সেই নিজ দলের সদস্যদের চাপে পড়ে তাকেও সরে যেতে হয়। অবশ্য এজন্য লিজ ট্রাসের কিছু অর্থনৈতিক নীতিও দায়ী ছিল। ওই সময় কনজারভেটিভ পার্টির ভেতরের দ্বন্দ্ব প্রকাশ পেয়েছিল। পরবর্তীতে ঋষি সুনাক প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছিল।
কিন্তু গতকাল শুক্রবার (৯ জুন) বরিস জনসন হাউজ অব কমন্স থেকে পদত্যাগ করার পর দলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব আবারও সামনে চলে এসেছে।
বরিস এমপিত্ব ছাড়ার পর তার দুই ঘনিষ্ঠ সহচরও পদত্যাগ করেছেন।
করোনা বিধি লঙ্ঘনের দায়ে বর্তমানে বরিসের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। আর সেই তদন্তটি করছে কনজারভেটিভ পার্টির সদস্যদের দিয়ে তৈরি প্রিভিলিজেস কমিটি।
পদত্যাগ করার পর দীর্ঘ বিবৃতিতে বরিস জনসন কমিটির তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, তাকে সরিয়ে দেওয়ার কাজ চলছে। এছাড়া প্রকাশ্যে প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের ওপরও চড়াও হয়েছেন তিনি।
বরিসের কাছের যেসব লোক রয়েছেন তারাও ঋষির সমালোচনা করেছেন।
সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজের সাংবাদিকের প্রকাশিত একটি স্ক্রিনশটে দেখা গেছে কনজারভেটিভ পার্টির যে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ রয়েছে সেখানে এমপি আন্দ্রে জেনকেনস বলেছেন, ‘খুব ভালো, ঋষি সুনাক এই ছাইপাঁশ (ননসেন্স) শুরু করার জন্য।’
ঋষি সুনাক প্রধানমন্ত্রী হওয়ার বিষয়টি বরিস জনসন সহজভাবে নেননি। তবে এখন তিনি হাউজ অব কমন্স থেকে পদত্যাগ করায় ঋষি সুনাক হাফ ছেড়ে বেঁচেছেন বলে মন্তব্য করেছেন কনজারভেটিভ হোম অফিসের উপসম্পাদক হেনরি হিল।
তিনি বিবিসি রেডিওকে বলেছেন, ‘বরিস পদত্যাগ করার অর্থ হলো তার মিত্রদের তৈরি যে কোনো সমস্যা কম শক্তিশালী হবে।’
তবে বরিসসহ তিন এমপি পদত্যাগ করার বিষয়টি ঋষি সুনাকের জন্য একটি মাথাব্যাথার কারণ হবে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট।
এছাড়া তিন এমপি পদত্যাগ করার পর সরব হয়েছে দেশটির বিরোধী দলগুলো। তারা এখনই সাধারণ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার দাবি জানিয়েছে।
আগামী বছর যুক্তরাজ্যে নতুন নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। জরিপে দেখা গেছে, এ নির্বাচনে কনজারভেটিভ পার্টি হেরে যেতে পারে। আর এমন সময় তিন আসনে উপনির্বাচন আয়োজন কনজারভেটিভ পার্টি এবং প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের জন্য বড় একটি ধাক্কা হয়েই আসল।
সূত্র: রয়টার্স, দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট, বিবিসি
এমটিআই