যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বব্যবস্থা আর মানবে না রাশিয়া : ল্যাভরভ
সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে এককেন্দ্রীক যে বিশ্বব্যবস্থা চলছে তা আর মেনে নেবে না রাশিয়া। রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ এক বক্তব্যে জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নিজেদের নেতৃত্বাধীন বলয় গড়ে তুলতে মনযোগ দিয়েছে মস্কো।
রাষ্ট্রীয় সফরে সোমবার সাবেক সোভিয়েত রাজ্য তাজিকিস্তানে গিয়েছিলেন ল্যাভরভ। রাজধানী দুশানবেতে এক বক্তৃতায় তিনি বলেন, ‘ওয়াশিংটন বরাবরই ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায়। এ কারণে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির লক্ষ্য হলো বিশ্বের দিকে দিকে অস্থিতিশীলতা উস্কে দেওয়া। তারা একদিকে বিভিন্ন রাষ্ট্রে সন্ত্রাসবাদ উস্কে দেয়— আবার অন্যদিকে সেসব রাষ্ট্রকে নিরাপত্তা সহায়তাও দিয়ে থাকে। বছরের পর বছর এভাবেই চলছে।’
গত শতকের নব্বইয়ের দশকের শুরুর দিকে ভেঙে যায় সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র সোভিয়েত ইউনিয়ন, যার কেন্দ্র ছিল মস্কো। সুবিশাল এই রাষ্ট্র ভেঙ্গে গঠিত হয় রাশিয়াসহ ১৫টি স্বাধীন রাষ্ট্র। তবে এই ভাঙনের আগ পর্যন্ত ব্যাপক প্রতাপ নিয়েই বৈশ্বিক রাজনীতিতে সক্রিয় ছিল যুক্তরাষ্ট্রের চিরকালীন প্রতিদ্বন্দ্বী এই রাষ্ট্রটি।
সোভিয়েত ভেঙে যাওয়ার পর কার্যত পুরোপুরি এলোমেলো হয়ে যায় রাশিয়া। অর্থনৈতিক চাপ, বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলোর তৎপরতা, সামাজিক সংহতি প্রভৃতি সংকট সামাল দিতে দেশটির কেটে যায় কয়েক দশক। এই সময়সীমার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রও তার প্রভাবিত এককেন্দ্রীক বিশ্বব্যবস্থা গড়ে তুলতে সক্ষম হয়।
তবে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নিজের হারানো অবস্থান ফিরে পেতে রাশিয়া গত কয়েক বছর ধরে চেষ্টা করছে এবং ইতোমধ্যে তাতে সাফল্যও আসা শুরু করেছে উল্লেখ করে ল্যাভরভ বলেন, ‘গত কয়েক বছর ধরে আমরা আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ঘনিষ্ট করার চেষ্টা করছি। রাশিয়ার মিত্ররা যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত বিশ্বব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে চায়। তারা আর এই বিশ্বব্যাবস্থা নিয়ম আর মানতে চায় না।’
‘কেবল আফ্রিকা বা লাতিন আমেরিকাই নয়, বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের অনেক দেশেরও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি মোহভঙ্গ ঘটেছে। বৈশ্বিক রাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব কমছে…যদিও ব্যাপরটা ঘটছে ধীরগতিতে, কিন্তু ঘটছে— তা নিশ্চিত।’
সাবেক সোভিয়েত রাজ্য তাজিকিস্তানে রাশিয়ার সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। বর্তমানে বিশ্বের হাতে গোনা যে কয়েকটি দেশে রুশ সামরিক ঘাঁটি রয়েছে সেসবের মধ্যে এই ঘাঁটিটি অন্যতম। সরকারি সফরে সেই ঘাঁটিটিই পরিদর্শনে গিয়েছিলেন তিনি।
এসএমডব্লিউ