পাকিস্তান: সুপ্রিম কোর্টকে বাঁচাতে বিক্ষোভের ডাক ইমরানের
এবার সুপ্রিম কোর্টকে রক্ষায় পাকিস্তানে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খান। দেশের শীর্ষ আদালতকে বাঁচানোর জন্য সোমবার (১৫ মে) শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের ডাক দেন তিনি।
ইমরান অভিযোগ করেছেন, নিরাপত্তা সংস্থাগুলো ফেডারেল সরকারকে শীর্ষ আদালত দখল করতে এবং সংবিধানকে ধ্বংস করতে সহায়তা করছে। মঙ্গলবার (১৬ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন।
এক টুইট বার্তায় পাকিস্তানের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘সকল নাগরিক শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের জন্য প্রস্তুত থাকুন। কারণ একবার যদি সংবিধান এবং সুপ্রিম কোর্ট ধ্বংস হয়ে যায়, তাহলে সেটি পাকিস্তানের স্বপ্নের সমাপ্তি ঘটাবে।’
ইমরান খান বলেছেন, পিটিআই চেয়ারম্যানের গ্রেপ্তারের পর শুরু হওয়া সহিংসতার কোনও তদন্ত ছাড়াই প্রায় ৭ হাজার পিটিআই কর্মী, নেতা এবং নারীকে জেলে পাঠানো হয়েছে। ওই সহিংসতার ফলে কয়েক ডজন প্রাণহানি এবং সরকারি সম্পত্তি ধ্বংস হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘(শেহবাজ) সরকার আসলে পাকিস্তানের বৃহত্তম এবং একমাত্র ফেডারেল পার্টিকে নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা করছে।’
এর আগে সোমবার একাধিক টুইট বার্তায় ইমরান বলেছেন: ‘তো লন্ডন পরিকল্পনা সম্পূর্ণভাবে প্রকাশ্যে এসেছে। আমি জেলের ভেতরে থাকাকালীন সহিংসতার অজুহাতে তারা বিচারক, জুরি এবং জল্লাদের ভূমিকা গ্রহণ করেছে। এখন পরিকল্পনা হলো- বুশরা বেগমকে (ইমরান খানের স্ত্রী) কারাগারে রেখে আমাকে অপমান করা এবং কিছু রাষ্ট্রদ্রোহ আইন প্রয়োগ করে আমাকে আগামী দশ বছর কারাগারে আটকে রাখা।’
৭০ বছর বয়সী এই নেতা বর্তমানে ১০০ টিরও বেশি মামলায় জামিনে মুক্ত রয়েছেন। টুইটে তিনি আরও বলেন: ‘লন্ডন প্ল্যান’ কার্যকর করার পর পিটিআই-এর অবশিষ্ট সদস্যদের বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ ক্র্যাকডাউন করা হবে। তিনি বলেন, অবশেষে পিটিআইকে নিষিদ্ধ করা হবে।
পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টের সামনে ক্ষমতাসীন জোটের আন্দোলনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, বিক্ষোভের উদ্দেশ্য ছিল ‘পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতিকে ভয় দেখানো যাতে তিনি সংবিধান অনুযায়ী রায় না দেন’।
তিনি বলেন, পাকিস্তান ইতোমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে এমন নির্লজ্জ আক্রমণ দেখেছে। ১৯৯৭ সালে পিএমএল-এন আদালতে আক্রমণ করেছিল এবং তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সাজ্জাদ আলী শাহকে তার পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছিল।
পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খান গত ৯ মে লাহোরে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর কর্পস কমান্ডারের বাসভবনে ভাংচুর ও দাঙ্গা সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ ভিডিও প্রমাণ হিসেবে প্রকাশ করেছেন। নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে ভিডিওটি ‘প্রমাণ’ হিসেবে শেয়ার করে তিনি লিখেছেন, ‘আমাদের সেন্ট্রাল পাঞ্জাবের সভাপতি ড. ইয়াসমিন রশিদ এবং তার বোনদের স্পষ্টতই বিক্ষোভকারীদের জিন্নাহ হাউসের ক্ষতি না করতে বলতে শোনা যাচ্ছে।’
ভিডিওতে ড. রশিদকে সমাবেশের নেতৃত্ব দিতে দেখা যায় এবং দলীয় কর্মীদের কোর কমান্ডার হাউসে প্রবেশ না করতেও নির্দেশ দিতে শোনা যায়। তিনি বলেন, ‘আমরা এখানে প্রতিবাদ করতে এসেছি।’
এসময় তিনি কর্মীদের সমাবেশে লুকিয়ে থাকা দুর্বৃত্তদের সম্পর্কে সচেতন থাকারও আহ্বান জানান।
সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী তার টুইটে ব্যাখ্যা করে বলেছেন, ‘স্পষ্টতই এটি সরকার মঞ্চস্থ করেছে। কারণ এই অভিযোগ সামনে এনেই পিটিআইয়ের বিরুদ্ধে আরও ক্র্যাকডাউন চালানোর পাশাপাশি আমাদের কর্মীদের এবং আমার সাথে সিনিয়র নেতৃত্বকে জেলে পাঠাতে চেয়েছিল সরকার।’
সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগ, ‘সরকার এসব করেছে যাতে লন্ডন পরিকল্পনায় নওয়াজ শরিফকে দেওয়া আশ্বাসকে পূরণ করা যায়।’
টিএম