দেশজুড়ে সহিংসতার জন্য দায়ী সেনাপ্রধান : ইমরান খান
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খান তার নিজের গ্রেপ্তার ও তার জেরে দেশজুড়ে সহিংসতার জন্য সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে দায়ী করেছেন। পাশাপাশি, সেনাপ্রধান তাকে ‘ভুল বুঝছেন’ বলেও মন্তব্য করেছেন ইমরান।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী শুক্রবার ইসলামাবাদ হাইকোর্টে হাজির হয়েছিলেন ইমরান খান। আদালতে শুনানির বিরতিতে বিবিসির সাংবাদিক ক্যারোলিন ডেভিসকে সাক্ষাৎকার দেন তিনি।
সাক্ষাৎকারে ক্যারোলিন প্রশ্ন করেন— মঙ্গলবারের গ্রেপ্তার ও তার জেরে পাকিস্তানজুড়ে সহিংসতার জন্য সামরিক বাহিনীর কতখানি দায় আছে বলে মরেন করেন পিটিআই চেয়ারম্যান।
উত্তরে ইমরান খান বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে যা যা হচ্ছে— তাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা ও সেনাসদ্যদের আমি দোষ দেব না… তবে একজনকে অবশ্যই দায়ী করব— আর তিনি হলেন সেনাপ্রধান। পাকিস্তান সামরিক বাহিনীতে এখন গণতন্ত্র বলে কিছু নেই। সম্প্রতি সামরিক বাহিনী যে অপমানের শিকার হলো— তার দায়ও সেনাপ্রধানকে নিতে হবে।’
ইমরান খান বলেন, ‘তিনি (সেনাপ্রধান আসিম মুনির) সবসময়ই এই ভয়ে থাকেন যে যদি আমি ক্ষমতায় আসি, সেক্ষেত্রে তাকে আমি পদচ্যুত করব। অথচ আমি তাকে বোঝাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি… এমনকি লিখিত বার্তা দিয়েও জানিয়েছি— এমনটা আমি করব না… কিন্তু সে আমার ওপর বিশ্বার রাখতে পারছে না। তার মনে এই ধারণা গেড়ে বসেছে— (ক্ষমতায় গেলে) আমি তাকে পদচ্যুত করবই। বর্তমানে দেশে যা যা হচ্ছে— সবকিছু তার সরাসরি নির্দেশে হচ্ছে।’
গত সপ্তাহের মঙ্গলবার (৯ মে) ইসলামাবাদ হাইকোর্টে মামলার শুনানিতে হাজিরা দিতে গিয়ে গ্রেপ্তার হন পিটিআইয়ের চেয়ারম্যান ইমরান খান। এই ঘটনায় পিটিআইয়ের কর্মী-সমর্থকরা দেশজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ-ভাঙচুর করেন এবং সরকারি-বেসরকারি সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি পাকিস্তানের ইতিহাসে এই প্রথম সেনা সদরদপ্তরসহ বিভিন্ন সেনাদপ্তর ও সেনানিবাসে হামলা চালান।
অবস্থা এমন গুরুতর জায়গায় পৌঁছায় যে, সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বুধবার রাজধানী ইসলামাবাদসহ দেশজুড়ে সেনা নামাতে বাধ্য হয় পাকিস্তানের সরকার।
এদিকে সেনা নামার পর গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে— সেনাবাহিনীর উচ্চ ও মধ্যম পর্যায়ের বেশ কিছু কর্মকর্তা চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে পিটিআইয়ে যোগ দিচ্ছেন।
তবে সামরিক বাহিনীর শীর্ষ মুখপাত্র ও জনসংযোগ বিভাগ আইএসপিআরের মহাপরিচালক এই গুঞ্জনকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।
এসএমডব্লিউ