সহসাই থামছে না সুদানের দুই বাহিনীর লড়াই
সুদানের সেনাবাহিনী ও প্যারামিলিটারি র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সের (আরএসএফ) মধ্যকার চলমান যুদ্ধ সহসাই থামছে না। কারণ সমস্যা সমাধানে কোনো পক্ষই সত্যিকার অর্থে আলোচনায় আগ্রহী নয় বলে জানিয়েছেন সুদানে নিযুক্ত জাতিসংঘের দূত।
সুদানে বর্তমানে ৭২ ঘণ্টা (৩ দিনের) যুদ্ধবিরতি চলছে। তবে অনেক জায়গায় এ যুদ্ধবিরতির চুক্তি লঙ্ঘন করে গোলাগুলি ও সংঘর্ষে জড়িয়েছেন দুই বাহিনীর সদস্যরা।
সুদানে নিযুক্ত জাতিসংঘের দূত ভলকার পার্থেস মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) নিউইয়র্কে নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে জানিয়েছেন, যুদ্ধরত সেনাবাহিনী ও আরএসএফ মনে করে তারা উভয়েই এ লড়াইয়ে জয় পেতে পারে। ফলে কেউই আলোচনায় বসতে চায় না।
জাতিসংঘের দূত ভলকার বর্তমানে সুদানের পূর্ব দিকের পোর্ট সুদানে রয়েছেন। সেখান থেকে তিনি ভার্চুয়ালি নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে অংশ নেন।
মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া ৭২ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি সম্পর্কে ভলকার জানিয়েছেন, দেশের কোথাও কোথাও এটি মানা হচ্ছে। কিন্তু আবার অনেক জায়গায় চুক্তি ভঙ্গ করে একে-অপরকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে সেনাবাহিনী ও আরএসএফ।
এছাড়া রাজধানী খারতুমকে দুই বাহিনী একটি যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করেছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। জনবহুল এলাকাসহ হাসপাতালগুলোতে বোমা হামলা ও গোলা বর্ষণ করেছে তারা। যা যুদ্ধ আইনের সুষ্পষ্ট লঙ্ঘন। এসব হামলায় শুধুমাত্র রাজধানীতেই এখন পর্যন্ত ৪৫৯ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন ৪ হাজার জনেরও বেশি।
এছাড়া খাদ্য, বিদ্যুৎ সরবরাহের বিষয়টি সীমিত হয়ে এসেছে। যুদ্ধ শুরুর আগেই দেশটির সাড়ে চার কোটি জনসংখ্যার চার ভাগের তিন ভাগ মানুষ খাদ্য সহায়তার ওপর নির্ভরশীল ছিলেন। এখন এটি আরও জটিল হয়েছে।
রাজধানীতে হামলার কারণে সেখানে মানবিক বিপর্যয়কর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভলকার। দুটি সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে লড়াই হলেও এর পুরো ভোগান্তি ভোগ করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
এদিকে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ওই বৈঠকে জানান, সুদানের সঙ্গে ওই অঞ্চলের সাতটি দেশের সীমান্ত রয়েছে। যদি সংঘাত এখনই থামানো না যায় তাহলে তা পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতেও ছড়িয়ে পড়তে পারে।
গত ১৫ এপ্রিল রাজধানী খারতুমে ট্যাংক ও অন্যান্য ভারী অস্ত্র নিয়ে সেনাবাহিনীর অবস্থান লক্ষ্য করে হামলা শুরু করে প্যারামিলিটারি বাহিনী আরএসএফ। মূলত আরএসএফকে দুই বছরের মধ্যে সেনাবাহিনীর সঙ্গে একীভূত করা নিয়ে দুই বাহিনীর মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়। যা পরবর্তীতে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে রূপ নেয়।
সূত্র: আল জাজিরা
এমটিআই