অভাবনীয় গরমে পুড়ছে পশ্চিমবঙ্গ
ভয়ঙ্কর গরমে হাঁসফাঁস করছে পশ্চিমবঙ্গ। রাজধানী কলকাতায় তাপমাত্রা ছাড়িয়েছে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পশ্চিমবঙ্গ আবহাওয়া দপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাজ্যের ২৩টি জেলার মধ্যে অন্তত ১১টিতে তাপমাত্রা বর্তমানে ৪০ ডিগ্রি বা তার কিছু বেশি।
ভারতে সাধারণত গ্রীষ্মের শুরুতে তাপামাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছাড়ায় দিল্লি, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ প্রভৃতি রাজ্যে। কিন্তু চলতি বছর গ্রীষ্মের শুরুতেই তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার কলকাতার তাপমাত্রা ছিল ৪০ থেকে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে, অন্যদিকে দিল্লির তাপামাত্রা ছিল ৩৮ ডিগ্রি।
সাধারণত পশ্চিমবঙ্গের গরমে আদ্রতা অনেক বেশি থাকে। কিন্তু এবার এই গরম ব্যতিক্রম। অত্যন্ত শুকনো এবং প্রায় জলীয়বাস্পশূন্য। পুরো রাজ্য জুড়ে শুকনো গরম বাতাস বয়ে যাচ্ছে। বৈরী এই আবহায়য় অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বলেও খবর পাওয়া গেছে।
রাজ্যের দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলা পশ্চিম বর্ধমানের পানগড়ে তাপামত্রা এর মধ্যেই ৪২ ডিগ্রিতে পৌঁছেছে। এছাড়া পুরুলিয়া, বাঁকুড়া ও মেদিনীপুর, হুগলি, উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার কিছু এলাকায় তাপমাত্রা বর্তমানে ৪১ ডিগ্রি বা তার বেশি। রাজ্যের আবহাওয়া দপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগামী ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টায় তাপমাত্রা আরও দুই ডিগ্রি বাড়তে পারে।
এক কর্মকর্তা বলেন, ‘দিল্লি নয়, কলকাতা এখন মরুশহর জয়সালমিরের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে। সেখানেও বৃহস্পতিবার তাপামাত্রা ছিল ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।’
সাধারণ মানুষের চিন্তা হলো, এপ্রিলেই যদি এই অবস্থা হয়, তাহলে মে-জুন মাসে কী হবে? রাজ্য সরকার ইতিমধ্যে ঘোষণা দিয়েছে, স্কুলগুলোতে গরমের ছুটি এগিয়ে আনা হবে। অন্যান্য বছর ২৪ মে এই ছুটি হত, এবার ২ মে থেকে তা শুরু হয়ে যাবে।
আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আপাতত চার-পাঁচদিন বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনা নেই। কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে তাপমাত্রা বর্তমানে স্বাভাবিকের তুলনায় তিন থেকে পাঁচ ডিগ্রি বেশি বলেও উল্লেখ করেছেন তারা।
তাপমাত্রা বাড়ছে রাজ্যের উত্তরাঞ্চলীয় জেলাগুলোতেও। মালদহে প্রায় ৪০, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরে ৩৮ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে তাপমাত্রা। বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণও কমছে।
আবহাওয়াবিদেরা বেলা ১২টার পর মানুষকে রাস্তায় বেরোতে নিষেধ করেছেন। গরমে শরীর-স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে প্রচুর পানি ও তরল খাদ্যগ্রহণসহ বিভিন্ন সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
এসএমডব্লিউ