মিয়ানমারের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিষেধাজ্ঞা
এবার মিয়ানমারের বিমানবাহিনীর জ্বালানি সরবরাহকে লক্ষ্য করে নতুন নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ক্ষমতা দখলের পর গত প্রায় ২ বছর ধরে বেসামরিক লোকজনের ওপর যে বিমান হামলা চালাচ্ছে জান্তা, তাকে আমলে নিয়েই জারি করা হয়েছে এই নিষেধাজ্ঞা।
শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রণালয় হিসেবে পরিচিত ট্রেজারি বিভাগ থেকে দেওয়া এক বিবৃতি অনুসারে, এবারের নিষেধজ্ঞায় মিয়ানমারের যুদ্ধবিমানের জ্বালানি সরবরাহ ব্যবস্থাকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ২ ব্যক্তি ও ৬টি প্রতিষ্ঠানকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে নিষেধাজ্ঞায়। এরা সবাই জান্তাকে যুদ্ধবিমানের জ্বালানি সরবরাহের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।
ট্রেজারি বিভাগের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এইসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে যুদ্ধবিমানের জ্বালানি সরবরাহ করা এবং তা আমদানি ও মজুত করতে সহায়তা করে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর অবিরাম বিমান ও বোমা হামলা চালাতে সক্ষম করে তুলেছে।’
২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লেইংয়ের নেতৃত্বে এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সুচির নেতৃত্বাধীন সরকারকে হটিয়ে জাতীয় ক্ষমতা দখল করে সামরিক বাহিনী। তারপর থেকেই দেশটির সেনাবাহিনীর সঙ্গে দ্বন্দ্ব-সংঘাত শুরু হয়েছে দেশটির বেসামরিক জনগণ ও সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠীগুলোর।
শুক্রবারের বিবৃতিতে ট্রেজারি বিভাগের সন্ত্রাসবাদ ও অর্থনৈতিক গোয়েন্দা শাখার আন্ডার সেক্রেটারি ব্রায়ান নেলসন বলেন, ‘ক্ষমতা দখলের পর থেকে বার্মার সামরিক সরকার দেশটির জনগণকে নিপীড়ণ-নির্যাতন করে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে বার্মার শান্তিকামী ও গণতন্ত্রপন্থী বেসামরিক জনগণের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ; এবং সামরিক বাহিনীর এই নৃশংসতা রোধের জন্য যা যা করা সম্ভব— যুক্তরাষ্ট্র করবে।’
সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখলের পর গত দুই বছরের দ্বন্দ্ব সংঘাতে মিয়ানমারে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন প্রায় ৪ হাজার এবং বাস্তুচ্যুত হয়েছেন লাখ লাখ মানুষ।
বেসামরিক সরকাবিরোধী আন্দোলন ও জান্তাবিরোধী বিভিন্ন সশস্ত্রগোষ্ঠীকে দমন করতে ২০২১ সাল থেকে মিয়ানমারের বিভিন্ন অঞ্চলে বিমান হামলা চালাচ্ছে জান্তা। দিন দিন এসব হামলার হার বাড়ছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, এই নিষেধাজ্ঞা একটি প্রাথমিক পদক্ষেপ মাত্র। মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে যারা জ্বালানি, অস্ত্র ও অন্যান্য রসদ সরবরাহ করে আসছেন— যে কোনো সময় তাদের ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি হবে।
এ সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানতে ওয়াশিংটনের মিয়ানমার দূতাবাসে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স, কিন্তু দূতাবাসের কোনো কর্মকর্তা মন্তব্য করতে চাননি।
এসএমডব্লিউ