মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরকে ‘মিথ্যাবাদী’ আখ্যা মেক্সিকোর
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরকে ‘মিথ্যাবাদী’ আখ্যা দিয়েছেন মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেস ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাডর। মেক্সিকান সরকারের মানবাধিকার রেকর্ড ইস্যুতে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের রেকর্ড সামনে আসার পর তিনি এই দাবি করেন।
বুধবার (২২ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের নতুন এক প্রতিবেদনে মেক্সিকোর লোপেজ ওব্রাডর সরকারের মানবাধিকার রেকর্ডের সমালোচনা করা হয়। একইসঙ্গে সেখানে সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার হয়েছে বলে নানা তথ্যও যুক্ত করা হয়।
আর এরপরই মঙ্গলবার মানবাধিকার বিষয়ে নিজের সরকারের রেকর্ডের সমালোচনা প্রত্যাখ্যান করেন প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেস ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাডর। এছাড়া সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহারের প্রতিবেদনকেও ‘মিথ্যা’ বলে উল্লেখ করেন তিনি।
সোমবার প্রকাশ করা মার্কিন ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মেক্সিকোতে পুলিশ, সামরিক এবং অন্যান্য কর্মকর্তাদের মাধ্যমে বেআইনি বা নির্বিচারে হত্যার বিশ্বাসযোগ্য তথ্য রয়েছে। এছাড়া সরকারি এজেন্টদের দিয়ে জোরপূর্বক গুম এবং এর পাশাপাশি নিরাপত্তা বাহিনীকে ব্যবহার করে নির্যাতন ও অমানবিক আচরণ করার বিষয়ও প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ‘দায়মুক্তি ও বিচারের অত্যন্ত কম হার মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং দুর্নীতিসহ সকল ধরনের অপরাধের জন্য সমস্যা হিসাবে রয়ে গেছে’। একইসঙ্গে মেক্সিকোতে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতার সমালোচনাও এতে করা হয়েছে।
মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন এই প্রতিবেদনে সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে মেক্সিকান প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেস ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাডর প্রতিবেদনটি প্রত্যাখ্যান করেন। সাংবাদিকদের কাছে তিনি দাবি করেন, ‘তারা মিথ্যা বলছে।’
লোপেজ ওব্রাডর উল্লেখ করেন, যুক্তরাষ্ট্র ‘নিজেদেরকে সারা বিশ্বের সরকার বলে মনে করে’।
মঙ্গলবার মেক্সিকোতে সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির সাথে দেখা করার কথা ছিল লোপেজ ওব্রাডরের। এর আগে অনুষ্ঠিত ওই সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘এটি নিয়ে ক্ষুব্ধ হওয়ার কিছুই নেই, তারা (যুক্তরাষ্ট্র) ঠিক এমনই। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রতিবেদনটি ‘সত্য নয়, তারা মিথ্যাবাদী।’
এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল এক নিউজ ব্রিফিংয়ে মেক্সিকান প্রেসিডেন্টের এই সমালোচনার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। এসময় ওয়াশিংটন ‘সারা বিশ্বের সরকারের’ মতো আচরণ করছে এবং মানবাধিকার প্রতিবেদনে বাড়িয়ে বলা হয়েছে এমন সমালোচনা প্রত্যাখ্যান করেন তিনি।
বেদান্ত প্যাটেল বলেন, ‘রিপোর্টে থাকা সবকিছুই মেক্সিকোর জন্য বাস্তব। মেক্সিকান পুলিশ, সামরিক এবং অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানের সদস্যদের দুর্নীতি ও বেআইনীভাবে নির্বিচারে হত্যার মতো অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয়টি মেক্সিকোর জন্য গুরুতর চ্যালেঞ্জ হিসাবে রয়ে গেছে এবং সে কারণেই আমাদের প্রতিবেদনে এসব বিষয়কে হাইলাইট করা হয়েছে।’
অবশ্য সাম্প্রতিক অতীতেও যুক্তরাষ্ট্র-বিরোধী বক্তব্য রেখেছেন মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট লোপেজ ওব্রাডর। গত সপ্তাহে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে মেক্সিকো নিরাপদ দেশ বলে দাবি করেন।
চলতি মাসে মেক্সিকো সীমান্তের কাছে মারাত্মক এক অপহরণের ঘটনায় দুই আমেরিকানের প্রাণহানি এবং এর জেরে সৃষ্ট সমালোচনার জবাবে মেক্সিকান প্রেসিডেন্ট একথা বলেছিলেন।
টিএম