আদানি ইস্যুতে মুখ খুললেন অমিত শাহ
যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগভিত্তিক গবেষণা সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের প্রতিবেদনে ভারতের শীর্ষস্থানীয় ধনকুবের ও শিল্পপতি গৌতম আদানির বাণিজ্যিক সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ আনার পর দেশটিতে এ নিয়ে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়। তবে এতদিন বিষয়টি নিয়ে চুপ ছিলেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। অবশেষে তিনি মুখ খুলেছেন।
শুক্রবার (১৮ মার্চ) ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে অমিত শাহ বলেন, দুর্নীতি করে থাকলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। তিনি দাবি করেন, বর্তমানে যতগুলো দুর্নীতির তদন্ত হচ্ছে তার মধ্যে শুধু দুটি বিজেপি সরকারের আমলের, বাকি মামলাগুলো ইউপিএ আমলের।
কংগ্রেসকে কটাক্ষ করে অমিত শাহ বলেন, ২০১৭ সালে উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচনের সময় কংগ্রেসের এক বড় নেত্রী জানিয়েছিলেন, যদি তারা দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিয়ে থাকেন তাহলে তদন্ত হোক। অথচ কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা পদক্ষেপ নেওয়ায় তিনিই এখন কান্নাকাটি করছেন।
ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আদালতে না গিয়ে বিরোধীরা চিৎকার চেঁচামেচি করছেন। আমি জনগণের কাছে জানতে চাই, কারও বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ থাকলে তদন্ত হওয়া উচিত কি না। এরপরই তিনি জানান, দুটি মামলা ছাড়া বাকিগুলো ইউপিএ আমলের। তার দাবি, ১০ বছরের ইউপিএ শাসনকালে ১২ লাখ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে।
আরও পড়ুন : আরও ৩ বিলিয়ন ডলার ঋণ পাচ্ছে আদানি গ্রুপ
আদানি ইস্যুতে অমিত শাহ বলেন, সুপ্রিম কোর্ট অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিদের দিয়ে দুই সদস্যের কমিটি গঠন করেছে। যাদের কাছে যা প্রমাণ রয়েছে তাদের (বিচারপতিদের) কাছে জমা দিন। দুর্নীতি করে থাকলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। প্রত্যেকের বিচারব্যবস্থায় আস্থা রাখা উচিত।
গত ২৪ জানুয়ারি চাঞ্চল্যকর সেই অনুসন্ধানী প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ ফার্ম। সেখানে বলা, দশককাল ধরে শেয়ার কারসাজি এবং আর্থিক লেনদেনে প্রতারণা চালিয়ে আসছে আদানি গ্রুপ। কৃত্রিমভাবে শেয়ারের দর বহু গুণ বাড়িয়ে এ গ্রুপ বিশাল সম্পদ গড়েছে। গত কয়েক বছরে আদানি গ্রুপের কোম্পানির শেয়ার ৫০০ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে। অবশ্য প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর থেকেই আদানি গ্রুপের সব কোম্পানির শেয়ারের দাম পড়তে শুরু করে।
অন্যদিকে, হিন্ডেনবার্গের সব অভিযোগ দ্ব্যর্থহীনভাবে অস্বীকার করেছে আদানি গ্রুপ। গ্রুপের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের প্রতিবেদন ‘মিথ্যা’, ‘ভিত্তিহীন’ এবং ‘শত্রুতাপূর্ণ’। আরও বলা হয়েছে, ভারতের শেয়ারবাজার সম্পর্কে ‘কোনো ধারণা নেই’ হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের। এমনকি এই প্রতিবেদন প্রকাশের মাধ্যমে হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ ভারত, তার স্বাধীনতা ও সংহতিকে ‘আক্রমণ’ করেছে বলেও অভিযোগ করেছে আদানি গ্রুপ।
/এসএসএইচ/