চীনের সেনাবাহিনীকে ‘ইস্পাতের মহাপ্রাচীর’ বানাতে চান শি
চীনের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দেশটির সেনাবাহিনীকে ‘ইস্পাতের মহাপ্রাচীর’ হিসেবে গড়ে তুলতে চান দেশটির প্রসিডেন্ট শি জিনপিং। সোমবার চীনের কেন্দ্রীয় আইনসভার বার্ষিক অধিবেশনে জিনপিং বলেন যুক্তরাষ্ট্র ও প্রতিবেশী কয়েকটি দেশের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার জেরেই এ পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
সোমবারের পার্লামেন্ট অধিবেশনে চীনের ৬৯ বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘নিরাপত্তা হলো উন্নয়নের ভিত্তিমূল, আর সমৃদ্ধির পূর্বশর্ত হলো স্থিতিশীলতা। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা বিশ্ব নানাভাবে চীনকে নিয়ন্ত্রণ ও চাপে রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছে , যার ফলে একদিকে দেশের উন্নয়ন গুরুতর চ্যালেঞ্জের মুখে, অন্যদিকে দেশের সার্বভৌমত্বেরও ওপর আঘাত আসার শঙ্কাও দিন দিন বাড়ছে।’
‘আমরা আমাদের সেনাবাহিনীকে ইস্পাতের মহাপ্রাচীর হিসেবে গড়ে তুলতে চাই, যেন শত্রুরা চীনের সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত হানার কথা চিন্তাও করতে না পারে।’
নজির ভেঙে টানা তৃতীয় মেয়াদের জন্য চীনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন শি জিনপিং। পদটি অনেকটা আনুষ্ঠানিক হলেও ইতোমধ্যেই মাও জেদংয়ের পর দেশটির সবচেয়ে প্রভাবশালী নেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন শি।
১০ মার্চ শুক্রবার চীনের পার্লামেন্ট ন্যাশনাল পিপল’স কংগ্রেস (এনপিসি) এর প্রায় তিন হাজার সদস্যের সবাই ‘গ্রেট হল অব দ্য পিপল’ এ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে শি-র (৬৯) পক্ষে ভোট দেন; তবে তার কোনো প্রতিদ্বন্দ্বীও ছিল না।
প্রাচীন মানবসভ্যতার সাতটি আশ্চর্যজনক স্থাপত্যের (সপ্তাশ্চর্য) মধ্যে অন্যতম চীনের মহাপ্রাচীর এখনও জনমনে বিস্ময় জাগায়। মধ্য এশিয়ার যাযাবর জাতি মঙ্গল ও হুনদের আক্রমণ প্রতিহত করতে খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম শতকে চীনের উত্তরাঞ্চলে ৮ হাজার ৮৫১ কিলোমিটার দীর্ঘ এক প্রাচীর গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয় তৎকালীন ক্ষমতাসীন শাং রাজবংশ, সেই প্রাচীর নির্মাণ শেষ করতে সময় লাগে ২ হাজার বছর। ষোল শতকে শেষ হয় সেই মহাপ্রাচীর নির্মাণের কাজ।
সম্প্রতি চীনের কূটনৈতিক দূতিয়ালিতে দীর্ঘ ৭ বছরের বৈরিতা ভুলে ফের কূটনৈতিক মিত্রতা স্থাপনে সম্মত মধ্যপ্রাচ্যের আঞ্চলিক রাজনীতির দুই শক্তিশালী ভরকেন্দ্র সৌদি ও ইরান। যুক্তরাষ্ট্রের প্রথমসারির দৈনিক নিউইয়র্ক টাইমস রোববার এক কলামে এ সম্পর্কে লিখেছে—মধ্যপ্রাচ্যে জয়ী হয়েছে চীন, হেরেছে যুক্তরাষ্ট্র।
এই সময়ে শি জিনপিংয়ের সেনাবাহিনীকে শক্তিশালী করার ঘোষণা আগ্রহী করে তুলেছে আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকদের।
এসএমডব্লিউ