রাশিয়ার কাছ থেকে অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান কিনছে ইরান
রাশিয়ার কাছ থেকে অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান কিনছে ইরান। এ লক্ষ্যে রাশিয়ার সঙ্গে একটি চুক্তিতেও পৌঁছেছে দেশটি। ইরানের রাষ্ট্রীয় মিডিয়ার বরাত দিয়ে শনিবার (১১ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ার কাছ থেকে উন্নত এসইউ-৩৫ যুদ্ধবিমান কেনার জন্য ইরান একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে বলে পশ্চিম এশিয়ার এই দেশটির রাষ্ট্রীয় মিডিয়া শনিবার জানিয়েছে। এর মাধ্যমে মস্কো-তেহরানের মধ্যকার সম্পর্ক আরও প্রসারিত হওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধে ইরানের তৈরি ড্রোনও ব্যবহার করেছে রাশিয়া।
রয়টার্স বলছে, নিউইয়র্কের জাতিসংঘে ইরানের মিশনকে উদ্ধৃত করে তেহরানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারকারী আইআরআইবি জানিয়েছে, ‘সুখোই-৩৫ যুদ্ধবিমান ইরানের কাছে প্রযুক্তিগতভাবে গ্রহণযোগ্য এবং এই যুদ্ধবিমান কেনার জন্য (রাশিয়ার সঙ্গে) একটি চুক্তি চূড়ান্ত করেছে ইরান।’
অবশ্য ইরানের সঙ্গে হওয়া ওই চুক্তির বিষয়ে আইআরআইবি’র প্রতিবেদনে রাশিয়ার পক্ষ থেকে কোনও নিশ্চিতকরণ বক্তব্য উল্লেখ করা হয়নি। এমনকি ওই চুক্তির বিবরণও প্রকাশ করা হয়নি। আইআরআইবি জানিয়েছে, ইরান আরও কয়েকটি অজ্ঞাত দেশের কাছ থেকে সামরিক বিমান কেনার বিষয়ে আলোচনা করেছে বলে জাতিসংঘে ইরানের মিশন তথ্য দিয়েছে।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গত বছরের জুলাইয়ে তেহরানে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির সাথে দেখা করেছিলেন। সেসময় ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধ নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর চাপের মুখেও ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের ওপর জোর দেন উভয় নেতা।
এছাড়া ইউক্রেনে চলমান আগ্রাসনে রাশিয়া ইরানের তৈরি ড্রোন ব্যবহার করছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। তবে ইরান রাশিয়ায় ড্রোন পাঠানোর কথা স্বীকার করলেও তেহরানের দাবি, গত বছর ইউক্রেনে মস্কোর আগ্রাসনের আগেই সেগুলো (রাশিয়ায়) পাঠানো হয়েছিল।
অবশ্য ইউক্রেনে ইরান-নির্মিত ড্রোন ব্যবহার করার বিষয়টিও অস্বীকার করছে মস্কো। যদিও রুশ বাহিনীর হামলার কাজে ব্যবহৃত হওয়া ইরানের তৈরি বহু ড্রোন ইউক্রেনে গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে এবং ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার করা হয়েছে।
রয়টার্স বলছে, ইরানের বিমান বাহিনীর কাছে মাত্র কয়েক ডজন স্ট্রাইক এয়ারক্রাফ্ট রয়েছে যেগুলো হামলা চালাতে সক্ষম: এর বেশিরভাগই রাশিয়ান যুদ্ধবিমান এবং সেইসাথে ১৯৭৯ সালের ইরানী বিপ্লবের আগে তেহরানের হাতে যাওয়া কিছু মার্কিন মডেলের যুদ্ধবিমানও রয়েছে।
অবশ্য তেহরান নিজেও যুদ্ধবিমান উৎপাদনের চেষ্টা করেছে। ২০১৮ সালে ইরান বলেছিল, তারা তার বিমান বাহিনীতে ব্যবহারের জন্য স্থানীয়ভাবে ডিজাইন করা কাউসার ফাইটার উৎপাদন শুরু করেছে।
তবে কিছু সামরিক বিশেষজ্ঞ বিশ্বাস করেন, ইরানি এই জেটটি ১৯৬০ এর দশকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম উৎপাদিত এফ-৫ যুদ্ধবিমানের কার্বন কপি।
টিএম