বাখমুতের অর্ধাংশ দখলের দাবি রাশিয়ার
ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় শহর বাখমুতের পূর্বাঞ্চল দখলের দাবি করেছেন রাশিয়ার বেসরকারি সামরিক প্রতিষ্ঠান ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোশিন। যদি তার এই দাবি সত্য হয়, সেক্ষেত্রে ধরে নেওয়া যায়— শহরটির অর্ধেক অংশের নিয়ন্ত্রণ এখন রুশ বাহিনীর হাতে।
বুধবার (৮ মার্চ) সন্ধ্যায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টেলিগ্রামে এক পোস্টে প্রিগোশিন বলেন, ‘বাখমুতকা নদীর পূর্বতীরে যা যা আছে, তার সবই এখন ওয়াগনার বাহিনীর দখলে।’
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশ বাহিনীকে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এই অভিযানে রুশ বাহিনীর সহযোগী হিসেবে কাজ করছে ওয়াগনার গ্রুপ। বর্তমানে অভিযানরত রুশ বাহিনীর ১০ শতাংশ সেনা ওয়াগনার গ্রুপের।
অভিযান শুরুর পর মে মাসে পূর্বাঞ্চলীয় এই শহরটি দখলের জন্য অগ্রসর হয় রুশ বাহিনী। কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই শহরটি নিজেদের দখলে রাখতে ব্যাপক প্রতিরোধ গড়ে তোলে ইউক্রেনীয় বাহিনীর সদস্যরাও। ইউক্রেনীয় বাহিনীর গোলাবর্ষণে প্রচুর সংখ্যক রুশ সেনা নিহতও হন।
কিন্তু দুই সপ্তাহ আগে বাখমুতে তীব্র লড়াই শুরু করে রুশ বাহিনী। এর মধ্যে গত সপ্তাহে রুশ বাহিনীর আক্রমণের তীব্রতার সামনে বেকায়দায় পড়ে ইউক্রেনীয় বাহিনীর সেনারা।
ওয়াগনার প্রধান প্রিগোশিনের এই দাবির আগে বুধবার সকালে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর জেনারেল স্টাফ এক বার্তায় বলেন, ‘নিজেদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়া সত্ত্বেও শত্রুরা বাখমুত শহরে তাণ্ডব চলাচ্ছে।’
বাখমুত শহরটির মাঝ দিয়ে চলে গেছে বাখমুতকা নদী। এই নদীই শহরটিকে পূর্ব ও পশ্চিম— দু’ভাগে ভাগ করেছে। শহরের পূর্বাঞ্চলটি রাশিয়ার অন্তর্ভুক্ত দনবাস অঞ্চলের সংলগ্ন। এ কারণেই এই শহরটির দখল নিয়ে মরিয়া হয়ে উঠেছিল রুশ বাহিনী।
বাখমুত শহর যে রুশ বাহিনীর আয়ত্তে যাচ্ছে তার আভাস মিলেছিল গতকাল (মঙ্গলবার) ন্যাটোর মহাসচিব জিনস স্টলটেনবার্গের এক বক্তব্যে। সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে ন্যাটোর সদস্যরাষ্ট্রগুলোর প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের বৈঠক ছিল ৭ মার্চ। সেই বৈঠকে স্টলটেনবার্গ বলেছিলেন, ‘তারা (রুশ বাহিনী) ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে, কিন্তু এটাও সত্য— আর কিছুদিনের মধ্যে শহরটির নিয়ন্ত্রণ রুশ বাহিনীর হাতে চলে যাওয়ার ব্যাপক আশঙ্কা আছে।’
ন্যাটো মহাসচিবের এই বক্তব্যের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বাখমুত শহরের অর্ধেক দখল করল রুশ বাহিনী।
সূত্র : রয়টার্স
এসএমডব্লিউ