কলকাতায় জ্বর-শ্বাসকষ্ট-সর্দির নেপথ্যে শুধুই অ্যাডিনো?
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতায় জ্বর-শ্বাসকষ্ট ও সর্দি-কাশিতে আক্রান্তের সংখ্যা হুড়মুড়িয়ে বাড়ছে। এতে আশঙ্কা শুধুই কি অ্যাডিনো বা সমগোত্রীয় ভাইরাসের দাপট? নেপথ্যে করোনা নেই তো?
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, করোনার মতো এই ক্ষেত্রেও শিশুর শ্বাসযন্ত্রের কোষে ‘সাইটোকাইন স্টর্ম’ বা তীব্র প্রদাহ হচ্ছে। ফলে বাচ্চারা দ্রুত দুর্বল পড়ছে , শ্বাসযন্ত্র কাজ করছে না। পালস রেট নামছে। কাউকে কাউকে অক্সিজেনও দিতে হচ্ছে।
করোনা রোগীদের ক্ষেত্রে এমনটাই দেখা গিয়েছিল। তাই অ্যাডিনো ভাইরাসের দাপটেও করোনা পরীক্ষায় জোর দিচ্ছে স্বাস্থ্যভবন। রিপোর্ট পজিটিভ হলেই শিশুদের আইসোলেশন ওয়ার্ডে রেখে চিকিৎসা করতে হবে। বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য দপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে আশঙ্কার মেঘ আরও ঘনিয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, হাসপাতালে ভর্তি প্রায় সব বাচ্চার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইনফেকশন (তীব্র শ্বাসকষ্ট) রয়েছে। কোভিডের মতোই শ্বাসনালি ও ফুসফুসে সংক্রমণ হয়ে নিউমোনিয়া হওয়ারও প্রবল সম্ভাবনা। তাই যেসব বাচ্চা হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে, তাদের একবার করোনা টেস্ট করতে হবে। আক্রান্ত শিশু ও পরিবারকে মেনে চলতে হবে কোভিডবিধি।
বুধবার কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে ১৩ বছরের একটি মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, বাচ্চাটিকে তীব্র শ্বাসকষ্ট ও জ্বরসহ ভর্তি করা হয়েছিল। গত দেড় মাসে অন্তত ১০ শিশুর মৃত্যুর পরে স্বাস্থ্যদপ্তর নড়চড়ে বসেছে। এদিনই বি সি রায় শিশু হাসপাতালে কয়েকটি শিশুর কোভিড টেস্টের পাশাপাশি ভাইরাস প্যানেল টেস্ট হয়েছে। হাসপাতালের অধ্যক্ষ ডা. দিলীপ পালের কথায়, ‘‘ভাইরাস প্যানেল টেস্ট করলে একসঙ্গে অন্তত পাঁচটি ভাইরাসকে চিহ্নিত করা সম্ভব। হাসপাতালে অন্তত ৪০টি বাচ্চা ভেন্টিলেশনে রয়েছে। তাদের ২৪ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
মেডিকেল কলেজের শিশুরোগ ও ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিশেষজ্ঞ ডা. মিহির সরকার বলেন, দিনে কত আক্রান্ত, তার তথ্য কোভিডের সময় জানা যেত। এখন তো সেই সুযোগ নেই।
স্বাস্থ্যদপ্তরের এ দিনের বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট বলা হয়েছে, অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইনফেকশন (এআরআই), ইনফ্লুয়েঞ্জা লাইক ইলনেস (আইএলআই) অর্থাৎ ফ্লু এবং তীব্র শ্বাসকষ্ট ও জ্বরে আক্রান্ত বাচ্চাদের অবশ্যই কোভিড পরীক্ষা করতে হবে। ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. জয়দেব রায় বলেন, সব শিশুদের অ্যাডিনো সংক্রমণ ধরে নিয়ে চিকিৎসা হচ্ছে। এমনও হতে পারে, করোনা আর অ্যাডিনো, দুইয়ে মিলে সাঁড়াশি আক্রমণ শানাচ্ছে। তাই এত দ্রুত ছড়াচ্ছে।
ওএফ