শক্তিশালী স্বেচ্ছাসেবক সামরিক বাহিনী গঠনের ঘোষণা বেলারুশের
ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধের মধ্যেই শক্তিশালী স্বেচ্ছাসেবক সামরিক বাহিনী গঠনের ঘোষণা দিয়েছে বেলারুশ। সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বেলারুশের প্রেসিডেন্ট নিজেই এই ঘোষণা দেন।
পূর্ব ইউরোপের এই দেশটির স্বেচ্ছাসেবক এই সামরিক বাহিনীর আকার হবে এক লাখ থেকে দেড় লাখ সদস্যের। এমনকি প্রয়োজনে এর চেয়েও বেশি হতে পারে। মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
এতে বলা হয়েছে, বেলারুশিয়ান প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো একটি নতুন স্বেচ্ছাসেবক আঞ্চলিক প্রতিরক্ষা বাহিনী গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন বলে সোমবার জানিয়েছেন তিনি।
এর কারণ হিসেবে তিনি বলেছেন, সবাই যেন জানে কীভাবে ‘অস্ত্র পরিচালনা করতে হয়’ ও আগ্রাসনের প্রতিক্রিয়া জানাতে হয় এবং শান্তির সময়ে জনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে প্রস্তুত থাকতে হয়।
লুকাশেঙ্কো তার নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে বলেন, ‘পরিস্থিতি সহজ নয়। আমি একাধিকবার বলেছি: প্রতিটি মানুষকে অন্তত অস্ত্র পরিচালনা করতে সক্ষম হওয়া উচিত। অন্তত নিজের পরিবারকে রক্ষা করার জন্য এটা শেখা উচিত। আর যদি প্রয়োজন হয় তাহলে নিজের বাড়ি, নিজের জমি এবং প্রয়োজনে নিজের দেশকে রক্ষার জন্য (এটা কাজে লাগবে)।’
এক বছর ধরে যুদ্ধ করছে বেলারুশের দুই প্রতিবেশী রাশিয়া ও ইউক্রেন। এক বছর আগে ইউক্রেনে সৈন্য পাঠাতে রাশিয়াকে বেলারুশের মাটি ব্যবহার করার অনুমতি দিয়েছিলেন আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো। এছাড়া তিনি প্রায়শই বলে থাকেন, বেলারুশে আক্রমণ হলেই তার সেনাবাহিনী যুদ্ধ করবে।
লুকাশেঙ্কো সোমবার বলেছেন, ‘আগ্রাসনমূলক আচরণের ক্ষেত্রে প্রতিক্রিয়া বা জবাব দ্রুত, কঠোর এবং উপযুক্ত হবে।’
বেলারুশের প্রতিরক্ষমন্ত্রী ভিক্টর ক্রেনিন বলেছেন, আঞ্চলিক প্রতিরক্ষা বাহিনীতে এক লাখ থেকে দেড় লাখ স্বেচ্ছাসেবক বা প্রয়োজনে আরও বেশি থাকেবে। আধাসামরিক বাহিনীর এই গঠন সুষমভাবে প্রতিটি গ্রামে ও শহরে হবে।
২০২২ ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ’ মিলিটারি ব্যালেন্স এর তথ্য অনুসারে, বেলারুশের পেশাদার সেনাবাহিনীতে প্রায় ৪৮ হাজার সৈন্য এবং প্রায় ১২ হাজার সীমান্তরক্ষী রয়েছে।
প্রেসিডেন্ট লুকাশেঙ্কো ইউরোপের দীর্ঘতম শাসক। গত ২৮ বছর ধরে তিনি বেলারুশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। বেলারুশিয়ান এই প্রেসিডেন্ট রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীল এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সমর্থন তাকে ২০২০ সালে গণতন্ত্রপন্থি বিক্ষোভের পরও টিকে থাকতে সাহায্য করেছিল।
এছাড়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধে সমর্থনের জন্য সাবেক এই সোভিয়েত রাষ্ট্রের ওপর ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য দেশ বিলিয়ন ডলার মূল্যের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
টিএম