মলদোভায় অভ্যুত্থান ঘটানোর চেষ্টায় রাশিয়া, উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্র
ইউক্রেন এবং রোমানিয়ার প্রতিবেশী দেশ মলদোভায় কয়েকদিন ধরে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে। মূল্যস্ফীতি ও বিভিন্ন চাপে পড়ে গত ১০ ফেব্রুয়ারি মলদোভার প্রধানমন্ত্রী তার পুরো মন্ত্রিসভা নিয়ে পদত্যাগ করেন।
এরপরই দেশটির প্রেসিডেন্ট মাইয়া সান্দু দাবি করেন, মলদোভায় রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি করে অভ্যুত্থান ঘটানোর চেষ্টা করছে রাশিয়া।
আর এ বিষয়টি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিংকেন। শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) জার্মানির মিউনিখে নিরাপত্তা কনফারেন্সের ফাঁকে মলদোভার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক করেন ব্লিংকেন। ওই বৈঠকের পর তিনি জানিয়েছেন তারা ‘ভীষণ উদ্বিগ্ন।’
এ ব্যাপারে ব্লিংকেন বলেছেন, ‘মলদোভার সরকারকে অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে ফেলতে রাশিয়া যেসব চেষ্টা করছে আমরা এ নিয়ে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। মলদোভার নিরাপত্তা, স্বাধীনতা, অখণ্ডতা নিশ্চিতে প্রেসিডেন্ট এবং সরকার যে চেষ্ট চালাচ্ছেন সেগুলোর প্রতি আমরা শক্তিশালী সমর্থন জানাচ্ছি।’
মলদোভার সঙ্গে রাশিয়ার কোনো সীমান্ত নেই, তবুও দেশটি কেন গুরুত্বপূর্ণ?
মলদোভা ইউক্রেন এবং রোমানিয়ার মাঝামাঝি স্থানে অবস্থিত। এটি আগে সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ ছিল। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের আগে কিছু কিছু অঞ্চলে বিদ্রোহ শুরু হয়।
এরমধ্যে মলদোভা ও ইউক্রেনের মধ্যে অবস্থিত ট্রান্সনিসট্রিয়া নামক একটি অঞ্চল ১৯৯০ সালে নিজেদের আলাদা স্বাধীন দেশ হিসেবে ঘোষণা করে। এতে করে মলদোভার স্বাধীন দেশ হওয়া অথবা রোমানিয়ার সঙ্গে একত্রিত হওয়ার বিষয়টি হুমকিতে পড়ে।
কিন্তু তা সত্ত্বেও ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর মলদোভা স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। এরপর ট্রান্সনিসট্রিয়ায় অস্থিরতা শুরু হয়।
অস্থিরতার জেরে শান্তিরক্ষার নামে সেখানে নিজদের সেনা পাঠায় রাশিয়া। এখনো সেখানে রাশিয়ার সেনারা রুশপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। ওই অঞ্চলে নিজেদের আধিপত্য ধরে রাখতেই রাশিয়া ট্রান্সনিসট্রিয়া এবং মলদোভার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে থাকে।
কয়েকদিন আগে রাশিয়া দাবি করে ট্রান্সনিসট্রিয়ায় যেসব রুশ ভাষী বসবাস করেন তাদের ওপর নির্যাতন চালানো হচ্ছে। এ বিষয়টি নিয়েও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে পশ্চিমারা। কারণ রুশ ভাষীদের ওপর নির্যাতনের দোহাই দিয়েই গত বছর ইউক্রনের ডনবাসের দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন দেশের স্বীকৃতি দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এরপর অক্টোবরে এ অঞ্চলটি অধিগ্রহণ করে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত করেন তিনি।
সূত্র: সিএনএন
এমটিআই