ধ্বংসস্তূপে জন্ম নেওয়া সেই শিশুকে দত্তক নিতে কয়েকশ আবেদন
সিরিয়ার আলেপ্পো শহরে সোমবার ভূমিকম্পে ধসে পড়া ভবনের নিচ থেকে উদ্ধার করা হয় সদ্য ভূমিষ্ঠ এক মেয়ে শিশুকে। ওই শিশুটিকে যখন ধ্বংসস্তূপের নিচে পাওয়া যায় তখনো তার মায়ের নাড়ির সঙ্গে তার নাড়ি জোড়া অবস্থায় ছিল।
অলৌকিভাবে শিশুটি বেঁচে গেলেও তার বাবা-মা ও ভাই বোন সবাই মারা গেছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, জন্মের পরই সব হারানো শিশুটিকে এখন দত্তক নিতে আবেদন জানিয়েছেন কয়েকশ মানুষ।
বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিশুটির নাম রাখা হয়েছে আয়া। আরবিতে যার অর্থ অলৌকিক।
আয়াকে চিকিৎসা দিচ্ছেন হানি মারুফ নামের একজন শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ। তিনি বলেছেন, ‘আয়াকে সোমবার আনা হয়। তখন তার অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। তার শরীরে অসংখ্য ক্ষত ছিল। তার শরীর ঠাণ্ডা এবং শ্বাসকষ্ট ছিল। কিন্তু তার অবস্থা এখন স্থিতিশীল।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, শিশু আয়াকে উদ্ধার করে নিয়ে দৌড় দিচ্ছেন এক ব্যক্তি। তখন শিশুটির শরীরে কোনো কাপড় ছিল না।
আয়াকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে আসেন তার এক দুর সম্পর্কের আত্মীয়। তাকে দত্তক নিতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ওই হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন অসংখ্য মানুষ। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও অনেকে তাকে দত্তক নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
কুয়েতের একজন টিভি উপস্থাপিকা সরাসরি বলেছেন, ‘আমি এ শিশুটিকে দেখাশুনা ও দত্তক নিতে চাই, যদি আইনগতভাবে কোনো বাধা না থাকে।’
আয়া যে হাসপাতালে ভর্তি আছে সেই হাসপাতালের ব্যবস্থাপক ডাক্তার খালিদ আত্তিয়া জানিয়েছেন, তাদের সঙ্গে অনেকে যোগাযোগ করেছেন। কিন্তু তিনি বলেছেন, ‘আমি কাউকে এখন আয়াকে দত্তক নিতে দেব না, যতক্ষণ না পর্যন্ত তার আত্মীয়রা আসছে। আমি এখন তাকে নিজ সন্তানের মতো চিকিৎসা দিচ্ছি।’
ডাক্তার খালিদ আত্তিয়া জানিয়েছেন, তার নিজের একটি চার মাস বয়সী সন্তান রয়েছে। এখন তার সন্তানের সঙ্গে আয়াকেও দুগ্ধপান করাচ্ছেন তার স্ত্রী।
এদিকে আয়াকে উদ্ধার করা হয় আলেপ্পোর জিন্দারিস শহর থেকে। ওই শহরে এখনো অনেক মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে আছেন।
মোহাম্মদ আল-আদনান নামের এক স্থানীয় সাংবাদিক বিবিসিকে বলেছেন, ‘জিন্দারিসের পরিস্থিতি ভয়াবহ। অসংখ্য মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন।’ জিন্দারিসের প্রায় ৯০ ভাগ অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন সাংবাদিক আল-আদনান।
সূত্র: বিবিসি
এমটিআই