থাইল্যান্ডে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেওয়া স্থগিত
প্রধানমন্ত্রীর টিকা নেওয়ার মধ্য দিয়ে শুক্রবার থেকে থাইল্যান্ডে অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি টিকা দেওয়া শুরুর কথা থাকলেও ওই টিকাদান কর্মসূচি স্থগিত করেছে থাইল্যান্ড।
অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নিয়ে ডেনমার্ক ও নরওয়েসহ কয়েকটি দেশে রক্ত জমাট বাধার মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার খবর আসার পর এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে থাই কর্তৃপক্ষ।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী ইউরোপের প্রায় পঞ্চাশ লাখ মানুষ ইতোমধ্যেই অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা গ্রহণ করেছেন। এর মধ্যে প্রায় ত্রিশটি ক্ষেত্রে রক্ত জমাট বাধার মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার খবর প্রকাশ পেয়েছে।
অবশ্য ইউরোপীয়ান মেডিসিনস এজেন্সি (ইএমএ) বৃহস্পতিবার জানিয়েছে যে, অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকায় রক্ত জমাট বাধার কোন লক্ষণ তারা পায়নি। তাই জোটভূক্ত দেশগুলোতে এই টিকা দেওয়ার কোনো বাধা নেই।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভাবিত করোনা টিকাটি উৎপাদন করছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা। ব্রিটিশ এই কোম্পানিটি বলছে, ব্যাপকভিত্তিক ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের মাধ্যমে এই টিকার নিরাপত্তা সম্পর্কে সমীক্ষা করা হয়েছে।
থাইল্যান্ড যা বলছে
থাইল্যান্ডের টিকা কমিটির উপদেষ্টা পিয়াসাকাল সাকলসাতায়াদর্ন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘অ্যাস্ট্রাজেনেকার মান ভালো হলেও তবু কিছু দেশ দেরী করে প্রয়োগ করার কথা বলেছে। আমরাও দেরী করেই করবো।’
তবে দেশটির জনস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, ইউরোপে সাথে থাইল্যান্ডে আসা টিকার ব্যাচ আলাদা, আর রক্ত জমাট বাধার সমস্যা এশিয়ানদের মধ্যে সাধারণভাবে দেখা যায়নি।
চীনের করোনাভ্যাকের দুই লাখ ডোজের সাথে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার ১ লাখ ১৭ হাজার ৩শ ডোজ টিকা ২৪ ফেব্রুয়ারি থাইল্যান্ডে পৌঁছায়। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ত্রিশ হাজার মানুষ করোনাভ্যাক টিকা নিয়েছে। দেশটি বলছে, চীনা এই টিকার প্রয়োগ অব্যাহত রাখবে তারা।
অন্য দেশগুলো যা বলছে
যুক্তরাজ্যের ঔষধ ও স্বাস্থ্যসেবা নিয়ন্ত্রক সংস্থা বলছে, টিকায় সমস্যা হচ্ছে এমন কোন প্রমাণ এখনো নেই এবং জনগণকে টিকা দেওয়া অব্যাহত রাখা উচিত। যুক্তরাজ্যজুড়ে এক কোটি দশ লাখের বেশি ডোজ টিকা ইতিমধ্যে দেওয়া হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
অস্ট্রেলিয়াতেও তিন লাখ ডোজ টিকা গেছে এবং দেশটি বলছে, তারা টিকা দেওয়া অব্যাহত রাখবে। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘এ মূহুর্তে চিকিৎসকদের পরিষ্কার বার্তা হলো— এটি নিরাপদ টিকা এবং আমরা টিকাদান চালিয়ে যেতে চাই।’ ফিলিপাইনও বলছে, এই টিকাদান কর্মসূচি স্থগিত করার কোন কারণ নেই।
দক্ষিণ কোরিয়া বলছে, টিকা নেওয়ার কয়েকদিন পর আট জনের মৃত্যুর সাথে টিকার কোন সম্পর্ক পাওয়া যায়নি। তবে ডেনমার্ক, নরওয়ে ও আইসল্যান্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার এই টিকা দেওয়া আপাতত স্থগিত করেছে।
ইতালি ও অস্ট্রিয়া অবশ্য অ্যাস্ট্রাজেনেকার নির্দিষ্ট কিছু ব্যাচের টিকার ব্যবহার পূর্ব সতর্কতা হিসেবে বন্ধ করেছে।
ইউরোপীয় মেডিসিন এজেন্সি জানিয়েছে, ডেনমার্কের সিদ্ধান্ত পূর্বসতর্কতা হিসেবে নেওয়া এবং রক্ত জমাট বাধার যেসব খবর এসেছে সেগুলোর বিষয়ে পূর্ণ তদন্ত হচ্ছে।
এএস