উন্মুক্ত স্থানে ফিলিস্তিনের পতাকা নিষিদ্ধ করল ইসরায়েল
প্রকাশ্য জনবহুল ও সর্বসাধারণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত এমন স্থানে ফিলিস্তিনের পতাকা প্রদর্শন নিষিদ্ধ করেছে ইসরায়েল। ইহুদি এই দেশটির নতুন উগ্র ডানপন্থি জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন-গ্যভির ইতোমধ্যেই পাবলিক স্পেস থেকে ফিলিস্তিনি পতাকা অপসারণের নির্দেশ দিয়েছেন।
সোমবার (৯ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের নতুন উগ্র ডানপন্থি জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন-গ্যভির রোববার বলেছেন, তিনি পুলিশকে পাবলিক স্পেস থেকে ফিলিস্তিনি পতাকা অপসারণের নির্দেশ দিয়েছেন।
রয়টার্স বলছে, ইসরায়েলি আইনে ফিলিস্তিনি পতাকাকে বেআইনি বা অবৈধ নয়। তবে জনশৃঙ্খলার জন্য হুমকি রয়েছে বলে মনে করলে যে কোনও বস্তু সরিয়ে ফেলার অধিকার ইসরায়েলি পুলিশ ও সৈন্যদের রয়েছে।
কট্টর উগ্র ডানপন্থি দলগুলোকে নিয়ে জোট বেঁধে তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এসেছেন ইসরায়েলের নতুন প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। নেতানিয়াহুর নতুন সরকারে একটি অতি-জাতীয়তাবাদী দলের প্রধান হিসেবে রয়েছেন বেন-গ্যভির।
ইহুদি এই দেশটির নতুন সরকারে ইতামার বেন-গ্যভির জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন এবং মন্ত্রী হিসাবে পুলিশকে তত্ত্বাবধান করেন তিনি। এ কারণে ফিলিস্তিনি পতাকা অপসারণের প্রয়োজনে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন তিনি।
রয়টার্স বলছে, ১৯৮৩ সালে এক ইসরায়েলি সৈন্যকে অপহরণ ও হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর দীর্ঘদিন ধরে বন্দি থাকা এক ফিলিস্তিনি গত সপ্তাহে মুক্তি পান। এরপর উত্তর ইসরায়েলে নিজের গ্রামে ওই ফিলিস্তিনিকে বীরের মতো স্বাগত জানানো হয় এবং এ সময় ফিলিস্তিনি পতাকাও উড়ান অন্যরা।
আর এরপরই প্রকাশ্য জনবহুল ও সর্বসাধারণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত স্থানে ফিলিস্তিনের পতাকা প্রদর্শন নিষিদ্ধ করে ইসরায়েল। বেন-গ্যভির এক বিবৃতিতে বলেছেন, ফিলিস্তিনি পতাকা ওড়ানো এমন একটি কাজ যা সন্ত্রাসবাদীদের সমর্থন করে।
ইহুদি কট্টরপন্থি এই মন্ত্রীর দাবি, ‘আইন ভঙ্গকারীরা সন্ত্রাসবাদী পতাকা নেড়ে সন্ত্রাসবাদকে উস্কে দেবে এবং উৎসাহিত করবে, এটা হতে পারে না। তাই আমি প্রকাশ্য জনবহুল ও সর্বসাধারণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত স্থান থেকে সন্ত্রাসবাদকে সমর্থনকারী পতাকা সরানোর এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে উস্কানি বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছি।’
ইসরায়েলে বসবাসরত আরবরা দেশটির জনসংখ্যার প্রায় এক-পঞ্চমাংশ এবং বেশিরভাগই ফিলিস্তিনিদের বংশধর, যারা মূলত ১৯৪৮ সালের যুদ্ধের পরে নতুন প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্রের মধ্যেই থেকে গিয়েছিলেন।
ইসরায়েলের রাজনীতিতে তাদের অবস্থান নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিতর্ক রয়েছে। এসব মানুষ ইসরায়েলি নাগরিকত্বের পাশাপাশি ফিলিস্তিনি ঐতিহ্যের ভারসাম্যও রক্ষা করে চলেছেন।
টিএম