প্রস্রাব করে পায়জামা ভেজালেন প্রেসিডেন্ট, ভিডিও করায় গ্রেপ্তার
সরকারি এক অনুষ্ঠানে দাঁড়িয়ে জাতীয় সংগীত গাওয়ার সময় প্রস্রাব করে পায়জামা ভিজিয়ে ফেলেছেন উত্তর আফ্রিকার দেশ দক্ষিণ সুদানের প্রেসিডেন্ট সালভা কির। আকস্মিক এই ঘটনার দৃশ্য ক্যামেরাবন্দী করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারের দায়ে দেশটির ছয় সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শনিবার দক্ষিণ সুদানের গণমাধ্যমকর্মীদের সংগঠন জাতীয় সাংবাদিক ইউনিয়ন ওই ছয় সাংবাদিকের গ্রেপ্তারের তথ্য নিশ্চিত করেছে।
গত ডিসেম্বরের একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ৭১ বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট সালভা কির একটি সড়কের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের জন্য দাঁড়িয়ে আছেন। সড়কটির উদ্বোধনের আগে অতিথিদের সাথে নিয়ে দাঁড়িয়ে জাতীয় সংগীত গাইছেন তিনি। এ সময় হঠাৎ তার পরনের ধূসর পায়জামা ভিজে পানি গড়িয়ে নিচে পড়তে দেখা যায়।
আর এই দৃশ্য সাংবাদিকদের ক্যামেরায় ধরা পড়ে। ভিডিওটি কোনও টেলিভিশনে প্রচারিত না হলেও পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে যায়।
দক্ষিণ সুদানের সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি প্যাট্রিক ওয়েট বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন চ্যানেল দক্ষিণ সুদান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশনে কাজ করা সাংবাদিকদের মঙ্গলবার ও বুধবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্টের প্রস্রাব করার ভিডিও ফাঁস হয়ে যাওয়ার ব্যাপারে ওই সাংবাদিকরা অবগত বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।’
এ ব্যাপারে দেশটির তথ্যমন্ত্রী মাইকেল মাকুয়েই ও জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার মুখপাত্র ডেভিড কুমুরি তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেননি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
২০১১ সালে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে দক্ষিণ সুদানের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করছেন কির। তিনি অসুস্থ বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া গুজব বারবার অস্বীকার করেছেন দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা। গত এক দশকের বেশির ভাগ সময় সংঘাতে কেটেছে দক্ষিণ সুদানের।
দেশটির সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি প্যাট্রিক ওয়েট বলেন, গ্রেপ্তারকৃত সাংবাদিকরা হলেন ক্যামেরা অপারেটর জোসেফ অলিভার ও মোস্তফা ওসমান; ভিডিও সম্পাদক ভিক্টর লাডো, কন্ট্রিবিউটর জ্যাকব বেঞ্জামিন এবং নিয়ন্ত্রণ কক্ষের চেরবেক রুবেন ও জোভাল টুম্বে।
তিনি বলেন, আমরা উদ্বিগ্ন। কারণ আইনে যা বলা হয়েছে তার চেয়ে বেশি সময় ধরে সাংবাদিকদের আটকে রাখা হয়েছে। দক্ষিণ সুদানের আইন অনুযায়ী, সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের বিচারকের সামনে উপস্থাপনের আগে মাত্র ২৪ ঘণ্টার জন্য আটকে রাখার অনুমতি পায় কর্তৃপক্ষ।
সাংবাদিকদের অধিকার নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংগঠন কমিটি টু প্রোটেক্টের সাব-সাহারা আফ্রিকা অঞ্চলের প্রতিনিধি মুথোকি মুমো বলেছেন, কর্মকর্তারা যখন সংবাদ পরিবেশনকে প্রতিকূল হিসাবে মনে করেন, তখন সাংবাদিকদের নির্বিচারে আটকে রাখতে নিরাপত্তা কর্মীদের অনুমতি দেন। এই ঘটনা তারই একটি নমুনা।
এসএস