মানুষের মগজ খেকো অ্যামিবার সংক্রমণে দ. কোরিয়ায় প্রথম মৃত্যু
দক্ষিণ কোরিয়ায় নেগেলেরিয়া ফাউলেরি বা ‘মস্তিষ্ক খেকো অ্যামিবা’ থেকে প্রথম সংক্রমণের খবর পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। এছাড়া এতে সংক্রমিত ব্যক্তিও ইতোমধ্যেই মারা গেছেন।
থাইল্যান্ড থেকে দক্ষিণ কোরিয়ায় ফিরে আসার পর চলতি মাসেই মারা যান তিনি। মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, থাইল্যান্ড থেকে দক্ষিণ কোরিয়ায় ফেরার পর মারা যাওয়া কোরিয়ান নাগরিক নেগেলেরিয়া ফাউলেরিতে সংক্রমিত ছিলেন বলে নিশ্চিত করেছে কোরিয়া ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন এজেন্সি (কেডিসিএ)। মূলত নেগেলেরিয়া ফাউলেরি মানুষের মস্তিষ্ক ধ্বংস করে দেয়।
টাইমস অব ইন্ডিয়া বলছে, পঞ্চাশোর্ধ ওই ব্যক্তি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ থাইল্যান্ডে চার মাস থাকার পর গত ১০ ডিসেম্বর কোরিয়ায় ফিরে আসেন এবং পরের দিন তাকে একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ইয়োনহাপ নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, গত সপ্তাহের মঙ্গলবার তিনি মারা যান।
১৯৩৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম এই সংক্রমণের বিষয়ে রিপোর্ট করা হয়েছিল এবং দক্ষিণ কোরিয়ায় নেগেলেরিয়া ফাউলেরিতে সংক্রমণের এটিই প্রথম কোনও ঘটনা।
মূলত নেগেলেরিয়া ফাউলেরি হলো একটি অ্যামিবা যা সাধারণত সারা পৃথিবীতে উষ্ণ মিঠা পানির হ্রদ, নদী, খাল এবং পুকুরে পাওয়া যায়। এই অ্যামিবা সাধারণত নাক দিয়ে শ্বাস নেওয়ার সময় শরীরে প্রবেশ করে এবং মস্তিষ্কের টিস্যু ধ্বংস করতে মগজে চলে যায়।
২০২০ সালে এক প্রতিবেদনে বিবিসি জানিয়েছিল, নেগেলেরিয়া ফাউলেরি নামের আণুবীক্ষণিক এক-কোষী অ্যামিবা মানুষের মগজে সংক্রমণ ঘটিয়ে থাকে এবং এটা সাধারণত প্রাণঘাতী হয়। গরম মিষ্টি পানিতে বাস এই অ্যামিবা নাকের ভেতর দিয়ে মানুষের দেহে ঢোকে। তবে এটা একজন থেকে আরেকজনের দেহে ছড়ায় না।
কেডিসিএ বলেছে, নেগেলেরিয়া ফাউলেরিয়া মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমণের সম্ভাবনা কম। তবে যে অঞ্চলে এই রোগটি ছড়িয়ে পড়েছে সেখানে সাঁতার কাটা থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের বিরত থাকতে বলা হয়ে থাকে।
যুক্তরাষ্ট্র, ভারত এবং থাইল্যান্ডসহ ২০১৮ সাল পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে নেগেলেরিয়া ফাউলেরিতে সংক্রমণের মোট ৩৮১টি ঘটনা রিপোর্ট করা হয়েছে।
টিএম