টুইটারের প্রধান নির্বাহীর পদ ছাড়ার ঘোষণা মাস্কের
জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম টুইটারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন ইলেকট্রিক গাড়ি নির্মাতা ও প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান টেসলার প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ক।
টুইটারের প্রধান নির্বাহীর পদ থেকে তার সরে দাঁড়ানো উচিৎ কিনা- এমন প্রশ্নে ইলন মাস্কের জরিপে অংশ নেওয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষই তাকে চলে যাওয়ার পক্ষে মত দেওয়ার পর এই সিদ্ধান্ত জানালেন মার্কির এই ধনকুবের।
বুধবার (২১ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
— Elon Musk (@elonmusk) December 21, 2022
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন মাস্ক। অবশ্য পদত্যাগের আগে এই পদের জন্য নতুন একজনকে খুঁজে বের করবেন তিনি এবং এরপরই সংস্থাটি থেকে সরে দাঁড়াবেন।
এর আগে টুইটারের প্রধান নির্বাহীর পদ থেকে তার সরে দাঁড়ানো উচিৎ কিনা- এমন প্রশ্ন সামনে এনে ইলন মাস্ক একটি জরিপ শুরু করেন। ওই জরিপে অংশ নেওয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষই তাকে চলে যাওয়ার পক্ষে মত দেন।
জরিপে ৫৭ দশমিক ৫ শতাংশ উত্তরদাতাই বলেছেন, ইলন মাস্কের উচিৎ টুইটারের প্রধান নির্বাহীর পদ ছেড়ে দেওয়া। ইলন মাস্ক গত রোববার রাতে এই জরিপ শুরু করেন এবং পরে তিনি জরিপের ফল মেনে নেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন।
প্রায় এক কোটি ৮০ লাখ মানুষ জরিপে অংশ নেন।
বুধবার টুইটারে দেওয়া ওই পদত্যাগ বার্তায় মাস্ক বলেছেন, টুইটারে তার জায়গায় নতুন লোক খুঁজে পাওয়ার পরে তিনি কেবল সফ্টওয়্যার এবং সার্ভার টিম পরিচালনা করবেন। টুইটারের পাশাপাশি ইলেকট্রিক গাড়ি নির্মাতা ও প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান টেসলা এবং স্পেস এক্সও পরিচালনা করে থাকেন মাস্ক।
গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে ৪৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে টুইটার কিনে নেন ইলন মাস্ক। এরপর তিনি সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্ব নেন এবং এরপর থেকে প্ল্যাটফর্মটিতে তার আনা নানা পরিবর্তন ব্যাপক সমালোচনার শিকার হয়েছে।
বিবিসি বলছে, ইলন মাস্ক অক্টোবরে টুইটারের দায়িত্ব নেওয়ার পর এই প্ল্যাটফর্মে অনেক ধরনের বিতর্কিত পরিবর্তন নিয়ে আসেন। তিনি টুইটারের প্রায় অর্ধেক কর্মীকে ছাঁটাই করেন এবং অর্থের বিনিময়ে অ্যাকাউন্ট ভেরিফিকেশনের নিয়ম চালুর চেষ্টা চালান। পরে অবশ্য এটি স্থগিত রাখা হয়। গত সপ্তাহে এটি আবার চালু করা হয়েছে।
টুইটারের কনটেন্ট যাচাই-বাছাই করার ব্যাপারে তার মনোভাবও ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়। নাগরিক স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করে এমন গোষ্ঠীগুলো অভিযোগ করে যে, ইলন মাস্ক যেসব পদক্ষেপ নিচ্ছেন তা ঘৃণা এবং অপপ্রচার আরও বাড়াবে।
কয়েকজন সাংবাদিকের টুইটার অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়ায় গত শুক্রবার জাতিসংঘ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইলন মাস্কের সমালোচনা করে। এদের মধ্যে নিউ ইয়র্ক টাইমস, সিএনএন এবং ওয়াশিংটন পোস্টের মতো প্রতিষ্ঠানের সাংবাদিকরা আছেন।
এই সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছিল, তারা ইলন মাস্ক কখন কোথায় যাচ্ছেন সেসবের তথ্য টুইটারের শেয়ার করছিলেন। তবে সমালোচনার মুখে এই সাংবাদিকদের অ্যাকাউন্ট আবার সচল করা হয়।
জাতিসংঘ এক টুইটে বলেছে, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ‘কারও হাতের খেলনা নয়’। আর ইউরোপীয় ইউনিয়ন টুইটারের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
টিএম