দক্ষিণ কোরিয়ায় নিজেদের ‘মহাকাশ ইউনিটের’ শাখা খুলল মার্কিন বাহিনী
উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতা কিম জং উনের লাগাতার ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ ও হুমকি-ধমকির জবাব দিতে দক্ষিণ কোরিয়ায় নিজেদের শাখা খুলেছে মার্কিন প্রতিরক্ষা বাহিনীর বিশেষ বিভাগ ‘স্পেস ফোর্স’। নতুন সেই শাখার নাম দেওয়া হয়েছে ইউনাইটেড স্টেটস স্পেস ফোর্সেস কোরিয়া।
যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তা লেফট্যান্যান্ট কর্নেল জশুয়া ম্যাককালিয়ন এই ইউনিট পরিচালনার দায়িত্বে আছেন বলে এক প্রতিবেদনে নিশ্চিত করেছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
মার্কিন সেনাসদস্যদের মহাকাশ সংক্রান্ত সক্ষমতা বাড়ানো এবং বিভিন্ন অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র পর্যবেক্ষণ, শনাক্ত ও অনুসরণ করা স্পেস ফোর্সের প্রধান কাজ। কোরিয়া উপসাগরের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আনলে দক্ষিণ কোরিয়ায় মার্কিন স্পেস ফোর্সের নতুন শাখার উদ্বোধন অপ্রাসঙ্গিক নয়। কারণ, চলতি ২০২২ সালে কোরিয়া সাগর অঞ্চলে রেকর্ডসংখ্যক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করেছে উত্তর কোরিয়া। দক্ষিণ কোরিয়া, জাপানসহ প্রতিবেশী অন্যান্য ভয়-ভীতি দেখানোই ছিল এসব উৎক্ষেপনের মূল উদ্দেশ্য।
এক সময়ের অভিন্ন কোরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হয় ১৯৫০ সালে। তারপর ১৯৫৩ সালে যুদ্ধবিরতি চুক্তির ভিত্তিতে জন্ম হয় উত্তর কোরিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়া নামের দু’টি দেশের; কিন্তু তারপর থেকে বিভিন্ন দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে বিভিন্ন উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড চালানোর অভিযোগে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে। তবে ২০১১ সালে কিম জং উন উত্তর কোরিয়ার ক্ষমতার কেন্দ্রে আসার পর দেশটির এ ধরনের তৎপরতা আরও বেড়েছে।
এদিকে, ১৯৫৩ সালে দুই কোরিয়ার নেতাদের মধ্যে অস্ত্রবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরের পর দক্ষিণ কোরিয়ার উপকূলবর্তী শহর পিয়ংটেকে সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করে যুক্তরাষ্ট্র। এশিয়া মহাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের যত সামরিক ঘাঁটি আছে, সেসবের মধ্যে এই ঘাঁটিটি অন্যতম বৃহৎ, বর্তমানে প্রায় ২৮ হাজার মার্কিন সেনা আছেন ‘ওশন এয়ার বেস’ নামের এই ঘাঁটিতে।
যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর দক্ষিন কোরিয়া ইউনিটের কমান্ডার জেনারেল পল লাকামেরা দেশটিতে মার্কিন স্পেস ফোর্সের ইউনিট স্থাপনকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, কোরিয়া উপসাগর ও উত্তরপূর্ব এশিয়া অঞ্চলের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে এটি একটি সময়োপযোগী পদক্ষেপ।
ওশন এয়ার বেসে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বুধবার তিনি বলেন, ‘বিশ্বের যে কোনো দেশের চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা সদস্যরা দ্রুতগতিসম্পন্ন, ওয়াকিবহাল, সংযুক্ত, গোছানো, বৈধ এবং যে কারণে আমাদের এসব অগ্রগতি এসেছে— তার নাম স্পেসফোর্স।’
কিম জং উনের লাগাতার ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপনের জেরে চলতি বছর কোরিয়া উপসাগরে যৌথ সামরিক মহড়ার ঘোষণা দিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া সম্প্রতি নিজেদের অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘থাড ইউএস’ দক্ষিণ কোরিয়াকে দিয়েছে দেশটি।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জোটবদ্ধ সামরিক মহড়ার ঘোষণার পর সিউলকে সতর্কবার্তা দিয়েছে বেইজিং। সেই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ‘থাড ইউএস’ গ্রহণ করায় দক্ষিন কোরিয়ার সমালোচনাও করেছে চীন।
এসএমডব্লিউ