রাশিয়া ‘জ্বালানি সন্ত্রাস’ চালাচ্ছে, অভিযোগ জেলেনস্কির
টানা প্রায় সাড়ে ৮ মাস ধরে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ চলছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ইউক্রেনের পাল্টা হামলায় রাশিয়া বেশ কয়েক দফায় ব্যর্থতার মুখে পড়লেও গত কয়েকদিনে রুশ সেনারা আবারও কিছু অগ্রগতি অর্জন করেছেন।
এই পরিস্থিতিতে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ‘জ্বালানি সন্ত্রাস’ চালানোর অভিযোগ তুলেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি বলেন, রাশিয়া ইউক্রেনীয় জ্বালানি নেটওয়ার্কে হামলার পর ৪৫ লাখ মানুষ বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছে। শুক্রবার (৪ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
রাশিয়া সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ইউক্রেনে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বাড়িয়েছে। মূলত, ক্রিমিয়া উপদ্বীপের সাথে রাশিয়াকে সংযুক্তকারী ইউরোপের বৃহত্তম রেল ও সড়ক সেতুতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার প্রতিশোধ হিসেবে গত ৮ অক্টোবর থেকে ইউক্রেনের জ্বালানি নেটওয়ার্ক ও অবকাঠামোগুলোতে আক্রমণ শুরু করে রাশিয়া।
এর মধ্যে সম্প্রতি অধিকৃত ক্রিমিয়া উপদ্বীপের বৃহত্তম বন্দরনগরী সেভাস্তোপলের কাছে কৃষ্ণ সাগরে রুশ নৌবহরে ড্রোন হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত খাদ্যশস্য চুক্তি স্থগিত করে রাশিয়া। একইসঙ্গে গত সোমবার ইউক্রেনের জ্বালানি স্থাপনা লক্ষ্য করে রাশিয়া কার্যত ক্ষেপণাস্ত্র বৃষ্টি চালায়। যদিও কয়েকদিন পরই চুক্তিতে ফেরার ঘোষণা দেয় রাশিয়া।
বিবিসি বলছে, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ইউক্রেনের বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে বড় আকারের ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। যুদ্ধক্ষেত্রে একের পর এক বেদনাদায়ক ব্যর্থতার পর রাশিয়া সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে শহরাঞ্চলের বিদ্যুৎ অবকাঠামোতে আক্রমণ বাড়ায়।
প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মতে, মাত্র গত মাসে রাশিয়ার হামলায় ইউক্রেনের এক তৃতীয়াংশ বিদ্যুৎ কেন্দ্র ধ্বংস হয়ে গেছে। ফলে ইউক্রেনের সরকার দেশের জনগণকে অল্প বিদ্যুৎ ব্যবহার করার জন্য অনুরোধ করতে বাধ্য হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতের ভাষণে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেন, ‘আজ রাতে, প্রায় ৪৫ লাখ গ্রাহককে সাময়িকভাবে বিদ্যুৎ সেবা থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে’। তার দাবি, জ্বালানি অবকাঠামো লক্ষ্য করে রাশিয়ার এই হামলা মস্কোর দুর্বলতার লক্ষণ, কারণ রাশিয়ান বাহিনী সম্মুখসমরে অগ্রগতি অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘রাশিয়া যে জ্বালানি সন্ত্রাসবাদের আশ্রয় নিচ্ছে তা আমাদের শত্রুর দুর্বলতাকেই সবার সামনে তুলে ধরছে। রাশিয়া যুদ্ধক্ষেত্রে ইউক্রেনকে পরাজিত করতে পারে না, তাই তারা আমাদের জনগণকে এভাবে ধ্বংস করার চেষ্টা করছে।’
অবশ্য রাশিয়া যে ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে সেটি নিশ্চিত করেছে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ও। আর রাশিয়ার হামলা থেকে নিজেদের শহরগুলো রক্ষার জন্য কিয়েভের আরও বিমান প্রতিরক্ষা সক্ষমতা প্রয়োজন বলে জানিয়েছে ইউক্রেন।
টিএম