পাকিস্তানে সরকার উৎখাতের অভিযোগ আবারও অস্বীকার যুক্তরাষ্ট্রের
চলতি বছরের এপ্রিলে পাকিস্তানের পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে ক্ষমতা হারান দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। এরপর থেকে পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের (পিটিআই) এই প্রধান তার সরকারের ক্ষমতাচ্যুতির পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করে আসছেন।
তবে পাকিস্তানে সরকার পরিবর্তনের অভিযোগ আবারও প্রত্যাখ্যান করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির দাবি, পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের মধ্যে ভুল তথ্য আসতে দেবে না ওয়াশিংটন। মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগাম নির্বাচনের দাবিতে ইমরান খান বর্তমানে ইসলামাবাদ অভিমুখে লংমার্চ করছেন এবং সোমবার সেখানে দেওয়া ভাষণে চলতি বছরের এপ্রিলে তার সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরানোর ষড়যন্ত্রের বিষয়ে নিজের অবস্থানের পুনরাবৃত্তি করেন।
মূলত লংমার্চ সমাবেশে ইমরানের দেওয়া ভাষণের কয়েক ঘণ্টা পরই সাবেক এই পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগের জবাব দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এদিন ওয়াশিংটন জানায়, ইমরানের এই অভিযোগের বিষয়ে এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকবারই নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে বার্তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
সোমবার ওয়াশিংটনে সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেন, ‘আমরা যা করতে পারি তা হলো- সঠিক তথ্য ব্যবহার করে বিভ্রান্তি ও ভুল তথ্যকে মোকাবিলা করা।’
তিনি আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র এবং পাকিস্তানের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী সহযোগিতামূলক সম্পর্ককে আমরা মূল্যবান মনে করি। আমরা সবসময় একটি সমৃদ্ধ ও গণতান্ত্রিক পাকিস্তানকে আমাদের স্বার্থের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হিসাবে মনে করি। এটি এখনও অপরিবর্তিত রয়েছে।’
পাকিস্তানে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হওয়ার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের এই মুখপাত্র বলেন, যুক্তরাষ্ট্র শুধু পাকিস্তানে নয় বরং সারা বিশ্বেই সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক নীতিকে শান্তিপূর্ণভাবে সমুন্নত রাখাকে সমর্থন করে। এগুলো এমন একটি বিষয় যা নিয়ে আমরা বিশ্বজুড়ে আমাদের সকল অংশীদারদের সাথে কাজ করি।’
আফগানিস্তান আবার সন্ত্রাসের আশ্রয়স্থলে পরিণত হওয়ার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে নেড প্রাইস বলেন, ওয়াশিংটন খুব স্পষ্ট করে বলেছে- যুক্তরাষ্ট্র এবং বিশ্বজুড়ে মার্কিন অংশীদাররা আফগানিস্তানকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থলে পরিণত হতে দেবে না। কারণ এটা যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্বজুড়ে আমাদের অংশীদারদের জন্য হুমকি।
তিনি আরও বলেন, ‘দোহা চুক্তির অধীনে তালেবান গোষ্ঠী বারবার আশ্বাস দিয়েছে, অন্য দেশের জন্য নিরাপত্তা হুমকি সৃষ্টি করে এমন কোনো গোষ্ঠীকে আফগান ভূখণ্ড ব্যবহার করতে দেবে না। তারপরও তেমন কিছু হলে প্রেসিডেন্ট বাইডেন খুব স্পষ্ট করে বলেছেন, আফগানিস্তানে উদ্ভূত সন্ত্রাসী হুমকি বা উদ্বেগ মোকাবিলার জন্য প্রয়োজনে একতরফাভাবে কোনও কাজ করার ক্ষমতা আমাদের বজায় থাকবে।’
প্রাইস বলেন, আফগানিস্তান বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ প্রতিনিধি টম ওয়েস্ট সম্প্রতি কাতারের রাজধানী দোহায় তালেবান নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। সেখানে আফগান ক্ষমতাসীন এই গোষ্ঠীর সঙ্গে সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধসহ বেশ কয়েকটি মার্কিন স্বার্থ নিয়ে আলোচনা করেছেন তিনি।
টিএম