চাদের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় পুড়িয়ে দিল বিক্ষোভকারীরা
উত্তর-মধ্য আফ্রিকার দেশ চাদের নবনিযুক্ত প্রধানমন্ত্রী সালেহ কেবজাবোর দলীয় সদরদপ্তরে ভাঙচুর এবং লুটপাটের পর অগ্নিসংযোগ করেছে সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীরা। গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় দ্রুত উত্তরণের আহ্বান জানিয়ে বৃহস্পতিবার বিক্ষোভকারীদের শুরু করা বিক্ষোভ থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে হামলা চালানো হয়েছে। পরে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছেন।
গত বছরের এপ্রিলে মধ্য-আফ্রিকার সেনাশাসিত দেশটির প্রেসিডেন্ট ইদ্রিস দেবির আকস্মিক মৃত্যুর পর থেকে সেখানে বিশৃঙ্খলা চলছে। প্রায় তিন দশক ধরে শক্ত হাতে দেশ শাসন করা দেবি বিদ্রোহীদের সাথে লড়াইরত সৈন্যদের দেখতে গিয়ে আকস্মিক হামলার শিকার হয়ে মারা যান।
দেবির ছেলের নেতৃত্বে দেশটিতে সংকটকালীন সামরিক পরিষদ গঠন করা হয়েছে এবং প্রেসিডেন্টের মৃত্যুর পর এই পরিষদ দেশটির শাসন ক্ষমতা গ্রহণ করেছে। একই সঙ্গে আগামী ২০২৪ সালের অক্টোবরে দেশটিতে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ায় দেবির ছেলে নেতৃত্বাধীন সামরিক পরিষদের বিরুদ্ধে সম্প্রতি দেশটিতে প্রতিরোধ গড়ে উঠেছে।
পূর্বসূরি আলবার্ট পাহিমি প্যাদাক পদত্যাগ করার পর গত সপ্তাহে দেশটির প্রধানমন্ত্রী মনোনীত হয়েছেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর ডেমোক্রেসি অ্যান্ড রিনিউয়াল (ইউএনডিআর) পার্টির সভাপতি কেবজাবো।
নির্বাচনের আগ পর্যন্ত আগামী দুই বছরের জন্য চাদের নেতৃত্ব দেওয়ার লক্ষ্যে শুক্রবার নতুন করে জাতীয় ঐক্যের সরকার গঠন করা হয়েছে। কিন্তু সমালোচকরা দেবির দীর্ঘ শাসনের পর দেশটির দ্রুত গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় প্রত্যাবর্তন এবং সরকার পরিবর্তনের দাবি তুলেছেন।
বিক্ষোভের ওপর সরকার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলেও বৃহস্পতিবার ভোরের দিকে তা উপেক্ষা করে রাজধানী এন’জামেনায় টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তা অবরোধ করেন বিক্ষোভকারীরা। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে টেলিফোনে ইউএনডিআরের ভাইস-প্রেসিডেন্ট সেলেস্টিন টোপোনা বলেছেন, ‘আজ সকালে আমাদের সদরদপ্তরে ভাংচুর এবং পরে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে।’
প্যাদাকের রাজনৈতিক দলের সদরদপ্তরেও হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে বলে দলের মুখপাত্র আবু বকর সিদিক জানিয়েছেন। রাজধানী এন’জামেনায় প্রায় ১০০ জন বিক্ষোভকারীর প্রতিবাদ-সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ বলপ্রয়োগ ও কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে কয়েকজন বিক্ষোভকারী আহত হয়েছেন।
কয়েকজন বিক্ষোভকারী এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পোস্ট বলছে, বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী তাজা গুলি নিক্ষেপ করেছে। তবে এই দাবির সত্যতা স্বতন্ত্রভাবে যাচাই করা যায়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
বিক্ষোভের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে স্থানীয় একজন সাংবাদিক গুলিবিদ্ধ হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর মারা গেছেন বলে জানিয়েছেন তার ভাই। তবে এই বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলেও কোনও সাড়া দেয়নি দেশটির সরকার।
সূত্র: রয়টার্স।
এসএস